কেন তাদের ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ বলা হয় সেটাই যেন পাকিস্তান আরও একবার প্রমাণ করল। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই অপ্রত্যাশিতভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৫ রানে গুটিয়ে গেছে পাকিস্তান। এই ব্যর্থতার কী অজুহাত দেবেন সরফরাজ আহমেদ? হয়তো বলবেন পাকিস্তান তো এমনই। তাদের অতীত ইতিহাসও সেই সাক্ষ্যই দেয়।
১০৫ রান তাড়া করে জেতটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে কঠিন কিছু ছিল না। প্রস্তুতি ম্যাচে যে দল ৪২১ রান তুলতে পারে সেই দলকে এত স্বল্প রানে আটকে দেওয়াটা পাকিস্তানি বোলারদের জন্য অসাধ্য। তারপরও ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলে নিজের অন্তুর্ভুক্তির প্রমাণ দিয়েছেন মোহাম্মদ আমির। ওয়েস্ট ইন্ডিজও ওই ৩টি উইকেটই হারিয়েছে।
রান তাড়া করতে নেমে টি-টোয়েন্টি মেজাজেই ছিলেন ‘ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেইল। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ৩৪ বলে খেললেন ৫০ রানের ইনিংস।ছয় চারের বিপরীতে ছক্কা মেরেছেন তিনটি। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শাই হোপ (১১) ফিরে গেছেন অল্প রানেই। জয়ের জন্য বাকি কাজটুকু সেরেছেন নিকোলাস পুরান (৩৪*)। ৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন আমির।
এরআগে পাকিস্তানের ইনিংসে ধাক্কা দেওয়ার কাজটা শুরুতেই করেছিলেন শেলডেন কটরেল। তারপর আন্দ্রে রাসেলের অবিশ্বাস্য ৩ ওভারের স্পেল। পাকিস্তানকে দিলেন জোড়া ধাক্কা। তখনই পাকিস্তানের ভিত আসলে নড়ে গিয়েছিল।
এবারের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে অবিশ্বাস্য সব ইনিংস খেলেছেন। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে শুরুটা রাসেল করলেন বল হাতে। আইপিএলের ফর্মটাই তিনি যেন টেনে এনেছেন বিশ্বকাপে।
জেসন হোল্ডার শুক্রবার পাকিস্তানের টসে জিতে বোলিং বেছে নেন। তাঁর সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন শেলডন কটরেল ও আন্দ্রে রাসেল। ১৭ রানের মাথায় ওপেনার ইমান-উল-হককে শাই হোপের ক্যাচে পরিণত করেন কটরেল।
ফখর জামানকে দলীয় ৩৫ রানে বোল্ড করে পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দেন রাসেল। আউট হওয়ার আগে ফখরের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ বলে ২২। এর খানিকবাদে হ্যারিস সোহেলকেও ফেরান রাসেল। হোপের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সোহেল (৮)। রাসেলের প্রথম ৩ ওভারের স্পেল এরকম-৩-১-৪-২।
এরপর রাসেলকে আর বোলিংয়ে ফেরা লাগেনি। পাকিস্তানের পরের উইকেটগুলো ভাগাভাগি করে নিয়েছেন অধিনায়ক হোল্ডার ও ওসানে থমাস। ৬২ রানে ৪ উইকেট হারানো পাকিস্তান চোখের পলকে আরও ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে। ৮৩ রানে ৯ উইকেট চলে যায় পাকিস্তানের। ১০০ রানের আগেই অলআউট হওয়ার লজ্জা এসে গিয়েছিল। বাঁচিয়ে দিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ। শেষের দিকে তিনি ১১ বলে করেন ১৮ রান।
৫.৪ ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেয়েছেন থমাস। হোল্ডার ৩ উইকেট নিয়েছেন ৫ ওভার বোলিং করে। রান দিয়েছেন ৪২।
এই বিশ্বকাপেই অভিষেক হলো মোহাম্মদ আমিরের। ২০১০ সালে লর্ডসে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে তিনি না জড়ালে হয়তো ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপ খেলতে পারতেন।