নিউজ ডেস্ক:
ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের ক্যাসিনোতে মদ-জুয়া বিরোধী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান নিয়ে বিভিন্ন মহল সরকারের প্রশংসা করলেও বিরোধী দল বিএনপি বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্যাসিনো ও জুয়া নিয়ে নানা সমালোচনা করলেও দলটির বেশিরভাগ নেতা এই ইস্যুতে নীরবতা অবলম্বন করেছেন।
জানা গেছে, কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। কারণ ক্যাসিনো, মদ, জুয়া ও হাউজির সংস্কৃতি রাজধানীতে পরিচয় করিয়েছিল বিএনপি, এমন শঙ্কায় নীরব থাকাকে শ্রেয় মনে করছেন দলটির নেতারা। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে ক্যাসিনো ও জুয়া বিরোধী চলমান অভিযানে বিএনপির নীরবতার বিষয়ে জানা গেছে।
বিএনপির রাজনীতির বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখে এমন একটি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরপরই বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা, মির্জা আব্বাস, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মোসাদ্দেক আলী ফালুর মতো নেতার সহযোগিতা ও প্রচ্ছন্ন মদদে রাজধানীর বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাব ও অভিজাত হোটেলে মদ, জুয়া, হাউজি এবং ক্যাসিনোর অবৈধ ব্যবসা শুরু হয়। এসব অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে তারা সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন। এই টাকার বড় একটি অংশ কানাডা, লন্ডনে পাচার করেন বিএনপির এসব নেতারা। এছাড়া ২০০১ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এলে ক্যাসিনো ও জুয়ার ব্যবসা বাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠেন মির্জা আব্বাস ও খোকা। পরবর্তীতে তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মদদে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ক্লাব পাড়াগুলোতে জুয়া ও মদের আসর বসান তারা। বিনিময়ে তারেক রহমানকে ১৫ শতাংশ কমিশন দিতে হতো বিএনপি নেতাদের।
জানা গেছে, বিএনপি নেতাদের মদ, জুয়া, হাউজি ও ক্যাসিনোর বিষয়ে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল ছিলেন খোদ দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু দল ও দল পরিচালনার স্বার্থে তিনি এসব নেতাদের কিছু বলতেন না।
ক্যাসিনো ইস্যুতে বিএনপি নেতাদের নীরবতার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি ছেড়ে বিকল্পধারায় যোগদানকারী নেতা শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, আসলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার ভয়ে বিএনপি নেতারা ক্যাসিনো ও জুয়া নিয়ে মুখ খুলছেন না। কারণ আকাশের দিকে মুখ করে থুথু ছেটালে সেটি নিজের গায়েই পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতেই ক্যাসিনো ইস্যু এড়িয়ে যাচ্ছেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু মনে রাখা উচিত, পাপ কিন্তু বাপকেও ছাড়ে না।