ডেস্ক নিউজ
সফলতার সাথে টানা ১৩ বছর দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ সরকার। এই সাফল্য সহ্য করতে পারছে না দেশবিরোধী গোষ্ঠী। তাই আওয়ামী লীগ সরকারকে কোণঠাসা করতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্নমুখী চাপ ক্রমশ বাড়ছে।
আর এই চাপ সৃষ্টির ক্ষেত্রে যে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং তার সহযোগী জামায়াত সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে, এটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক বক্তৃতায় বলছেন। এমনকি জাতীয় সংসদের সদ্য সমাপ্ত শীতকালীন অধিবেশনেও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারের ওপর বহুমুখী চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত। এসব চাপের মূল উদ্দেশ্য একটাই, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো। সর্বোপরি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলা। এজন্য একটি ব্লু প্রিন্ট অনুসারে কাজ করে যাচ্ছে দেশের শান্তি বিনষ্টকারী জোট।
সরকারের ওপর বর্তমানে যেসব চতুর্মুখী চাপের চেষ্টা করছে দেশবিরোধী অপশক্তি, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. আন্তর্জাতিক চাপ: গত ৫ বছর ধরে বিএনপি-জামায়াত জোট নিবিড়ভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করছে সরকারের ইমেজ নষ্টের জন্য। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর থেকেই জামায়াত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে।
আর এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার দল এবং যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্যদের অর্থায়নে সৃষ্ট গুজব সেল এর তত্ত্বাবধানে। এই অপপ্রচারের প্রধান লক্ষ্য, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা প্রদান, যেমন- বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার সংরক্ষিত নয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই ইত্যাদি তথ্য-উপাত্ত গুলোকে মুখরোচক ভাবে উপস্থাপন করা।
এর ফলে যেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয় এবং প্রভাবশালী দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সেইসাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন যেন প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় সহজে।
২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম: বিএনপি গত প্রায় ৬ বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি এখন পুরোপুরি ভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর হাতে। তারা যে যেভাবে পারছে সে সেভাবে সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম কুৎসিত নোংরা মিথ্যাচার করছে।
আর গুজব সেল এর তত্ত্বাবধানে চালানো এ সমস্ত অপপ্রচারের ফলে মানুষের মধ্যেও নানা রকম বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। অসত্য বক্তব্য লাগামহীনভাবে প্রচারের ফলে অনেকে এটিকে বিশ্বাস করতেও শুরু করেছো। আর সামাজিক মাধ্যমের এই নিয়ন্ত্রনহীন অপপ্রচারের কারণে এখন সরকার কিছুটা হলেও চাপে পড়েছে।
৩. প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী: বাংলাদেশের প্রশাসনে এখন দৃশ্যত সবাই আওয়ামী লীগ। যার পূর্বপুরুষ দেশের বিরোধিতা করেছে, সেও এখন লোক দেখানো মুজিববন্দনায় বিভোর। অতি আওয়ামী লীগ হয়ে তারা প্রায়ই সরকারের গুণকীর্তন করছে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে তারা আসলে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে কাজ করছে।
প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা ক্রমশ প্রকাশ্য হচ্ছে। তারা এমন সব কর্মকাণ্ড করছে যে, এতে সরকারের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে, সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আর এই ঘরের শত্রু বিভীষণরা ক্রমশ প্রকাশ্য রূপ ধারণ করছে। প্রশাসনের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বেশিরভাগের ব্যাকগ্রাউন্ডই বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্ট।
৪. বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজকে সক্রিয় করা: বিএনপি-জামায়াত জোট বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজকে সক্রিয় করছে। যেমন- নির্বাচন কমিশন গঠন আইন নিয়ে সুশীল সমাজ বিএনপির লেখা স্ক্রিপ্ট অনুসারেই কথা বলছে। বিভিন্ন টকশোতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিএনপির নেতাদের বক্তব্যে কোনো পার্থক্য দেখা যায় না।
আবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিচ্ছে, তাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন করছে বাংলাদেশের সুশীল গোষ্ঠী। ফলে এতেও সরকারের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে।
এমন বহুমুখী চাপ দিয়ে সরকারকে কোণঠাসা করেই আন্দোলনের কথা ভাবছে। বিএনপি নেতারাও স্বীকার করছেন, তারা বিভিন্নভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। তাতে সরকার অনেকটাই সতর্ক। তবে সরকারের দায়িত্বশীলরা বলছেন, এ ধরনের চাপে বিচলিত হওয়ার প্রশ্নই আসেনা। বরং সরকার এ চাপ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাবে।