ডেস্ক নিউজ
গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চালায় একটি চক্র। পুলিশ সদস্যদের ছবির সঙ্গে উস্কানিমূলক, মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। চলে হাসি-ঠাট্টা ও তামাশা।
এমন মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক পোস্ট ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ সদস্যরা হতাশ হন। তাদের মধ্যে দেখা দেয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। বিষয়টি আলোচিত হয় পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে।
ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কয়েকদিন আগে আবারও পুলিশকে নিয়ে নেতিবাচক ও বিদ্বেষমূলক প্রচার শুরু হয়। এবারের প্রসঙ্গ- চট্টগ্রামে আসামির দায়ের কোপে কনস্টেবল জনি খানের কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়া।
সাইবার জগতে গোয়েন্দা ও প্রযুক্তিগত নজরদারি করে ইতোমধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো ১০-১৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের তালিকা ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত সংবাদগুলোর কমেন্ট অপশনে গিয়ে একটি মহল বিদ্বেষ ও উস্কানিমূলক অনেক মন্তব্য করেছে। ‘পুলিশের কবজি কাটার ঘটনা ভালো হয়েছে’; ‘এভাবেই পুলিশকে শায়েস্তা করা উচিত’; ‘পুলিশের উচিত শিক্ষা হয়েছে’, ‘পুলিশ মিথ্যা নাটক করছে’ ইত্যাদি বিদ্বেষমূলক কমেন্ট সেখানে করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এতদিন চুপ থাকলেও এবার নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। বিদ্বেষ ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে কাজ শুরু করেছে তারা।
বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশের পর কাজ শুরু করেছে ডিএমপি। সাইবার জগতে গোয়েন্দা ও প্রযুক্তিগত নজরদারি করে ইতোমধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো ১০-১৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের তালিকা ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
আসামি ধরতে গিয়ে কবজি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা দুঃখ ও কষ্ট পেয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সবার মনে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনায় ১০-১৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের খুব দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবেডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) পদ মর্যাদার এক কর্মকর্তা
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, তালিকায় নাম থাকা এই ১০-১৫ জনের অধিকাংশের ফেসবুক আইডি ভুয়া। আইডিতে দেওয়া নাম ও প্রোফাইলে ব্যবহৃত ছবিও নকল। প্রযুক্তির ব্যবহার করে গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে তাদের প্রকৃত নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তের পর দেখা যায়, বিদ্বেষমূলক ও মিথ্যা তথ্য প্রচারকারীদের অনেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক বা সক্রিয় সদস্য। এছাড়া কয়েকজন আছেন শিক্ষার্থী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী উস্কানিমূলক ও বিদ্বেষমূলক কমেন্ট করে অনেকে। এসব কমেন্টকারীরা আমাদের নজরদারিতে থাকে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়; এ ক্ষেত্রেও নেওয়া হবেডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহকারী কমিশনার ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) পদ মর্যাদার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামি ধরতে গিয়ে কবজি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা দুঃখ ও কষ্ট পেয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সবার মনে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনায় ১০-১৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের খুব দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহকারী কমিশনার ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী উস্কানিমূলক ও বিদ্বেষমূলক কমেন্ট করে অনেকে। এসব কমেন্টকারীরা আমাদের নজরদারিতে থাকে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়; এ ক্ষেত্রেও নেওয়া হবে।
গত ১৫ মে সকালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় একটি মামলার আসামি ধরতে অভিযানে যায় পুলিশ। সেখানে আসামির দায়ের কোপে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয় কনস্টেবল জনি খানের। প্রাথমিকভাবে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য একই দিন তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন অপারেশন করে বিচ্ছিন্ন হওয়া কবজি জোড়া লাগানো হয় জনি খানের হাতে। এ ঘটনায় লোহাগাড়া থানায় একটি মামলা করা হয়। মূল অভিযুক্ত কবির ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।