ডেস্ক নিউজ
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এই দেশে অনেকেই ক্ষমতায় ছিল, কেউ কিন্তু পাসপোর্টে কিংবা সরকারি ফরমে তৃতীয় লিঙ্গ লেখার সুযোগ করে দেয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরেই তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি এসেছে। এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মা হচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ডিসি অফিস প্রাঙ্গণে প্রশাসনের উদ্যোগে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুভিত্তিক বই এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের জন্য ওষুধ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ার কারণে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার ঈদযাত্রা অনেক স্বস্তিদায়ক হচ্ছে। এটি আমার কথা নয়, মানুষের বক্তব্য। অথচ অনলাইনে দেখলাম, বিএনপি নেতারা বক্তব্য রাখছেন মানুষের ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ হচ্ছে। আসলে মানুষ ভালো আছে বিধায় তাদের মনটা খারাপ।
পবিত্র ঈদুল আজহা ত্যাগ এবং মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের শিক্ষা দেয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আমি আশা করব ঈদকে সামনে রেখে তারা দেশে মিথ্যাচার এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতিটা বন্ধ করবেন।
ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের সব জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশ্বাস করে। গত সাড়ে তের বছর সময়ের মধ্যে অবহেলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটি বাংলাদেশে আগে কখনও হয়নি। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশেও এভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা ভেবে উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়নি।
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কোনো স্বীকৃতি আগে ছিল না, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই স্বীকৃতি এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তাদের জন্য অনেক ক্ষেত্রে চাকরিতে বিশেষ কোটা রাখা হয়েছে, নানাভাবে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের তাদের পরিবারও অস্বীকার করে, সেই মানুষের কথা জননেত্রী শেখ হাসিনা ভেবেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে সরকারি অফিসে বড় পদে তৃতীয় লিঙ্গের চাকরি হচ্ছে। তাদের জন্য ব্যাংকে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের ক্ষেত্রেও তৃতীয় লিঙ্গকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা আছে। এভাবে সমাজের সব স্তরের মানুষের উন্নয়নের মাধ্যমে আজকে দেশ উন্নত হয়েছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে তের-চৌদ্দ বছর আগে শুধু তৃতীয় লিঙ্গ নয়, অটিস্টিক শিশুদেরও মা-বাবারা লুকিয়ে রাখতেন। আর এখন দেশের অটিস্টিক কিশোর-যুবকরা আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে অংশ নিয়ে পদক নিয়ে আসছে। এটি কেউ কখনও ভাবেনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের কারণে এটি সম্ভবপর হয়েছে। অর্থাৎ যেই শিশুদের তাদের মা-বাবাও লুকিয়ে রাখতেন, সেই শিশুদের কথাও ভেবেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সহ-সভাপতি এমএ মোরশেদ হোসেন, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি ফাল্গুনী হিজড়া প্রমুখ।