ডেস্ক নিউজ
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপলব্ধি তার নেতৃত্বের দূরদর্শিতারই প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। ৫০ বছর আগে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার কৃষক, আমার শ্রমিক দুর্নীতি করে না। দুর্নীতি করে কিছু শিক্ষিত দুর্নীতিবাজ। তার এ ভাষণ আজ অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। জালিয়াতির মাধ্যমে স্বর্ণ আত্মসাৎ মামলায় দুই আসামির জামিন শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন আদালত। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চে গত মঙ্গলবার এ শুনানি হয়। মামলায় জামিন প্রার্থনাকারী দুই আসামি হলেন- সমবায় ব্যাংকের মহিউদ্দিন আহমেদ মহি এবং ব্যাংক কর্মকর্তা আশফাকুজ্জামান।
তাদের জামিন শুনানিকালে আদালত (বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার) আরও বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর ৪২টি ভাষণের অডিও রেকর্ড শুনেছি। যেগুলোর মধ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রয়েছে। একটি ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, শিক্ষিতদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন, আমি যে এ দুর্নীতির কথা বললাম, আমার কৃষক দুর্নীতিবাজ? না। আমার শ্রমিক? না। তাহলে ঘুষ খায় কারা? এই আমরা, যারা শতকরা পাঁচজন শিক্ষিত। এই আমাদের মধ্যেই ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ। এ পর্যায়ে আসামিপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, বঙ্গবন্ধুর এসব ভাষণ পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার সময় এসেছে। এ সময় আসামিপক্ষের অপর দুই কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মোতাহার হোসেন সাজু ও আকমল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
শুনানি শেষে আদালত মামলার দুই আসামি সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে মহি ও ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (স্বর্ণ বন্ধকি ঋণ বিভাগ) মো. আশফাকুজ্জামানকে আগাম জামিন না দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত: গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদসহ ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সমবায় ব্যাংকে জমা হওয়া স্বর্ণ অসাধু উপায়ে প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসৎ অভিপ্রায়ে ষড়যন্ত্র করে আত্মসাৎ করেন। ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৬ টাকা মূল্যের স্বর্ণ আত্মসাৎ করা হয়। এরই মধ্যে এই মামলায় পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে দুদক।