নিউজ ডেস্ক :
কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জমির উপর স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’ বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রথম প্রকল্প। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এ পার্কের প্রয়োজনীয় সকল অফসাইট ইনফ্রাস্ট্রাকচার নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-২ এ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটির অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে আকৃষ্ট করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নির্ধারিত সময়ের আগে অর্জনের জন্য দেশের সকল বিভাগীয় শহরে হাই-টেক আইটি পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে হিসেবে কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি হবে দেশের প্রথম হাই-টেক পার্ক। এই পার্কের আয়তন ৩৫৫ একর। এর মধ্যে ৯৭ একর জমি ২০১৭ সালে পার্কের আওতায় আসে।
২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের মার্চে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাস্তবায়িত সাপোর্ট টু হাই-টেক পার্ক অথরিটি টু এস্টাব্লিশ হাই-টেক পার্ক কালিয়াকৈর, গাজীপুর শীর্ষক প্রকল্প এবং পরবর্তীতে কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্কের উন্নয়ন প্রকল্প এই পার্কের আওতাধীন জমিতে অবকাঠামো সৃষ্টি করা হয়। অতিরিক্ত ৯৭ একর জমি বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দের কার্যক্রম চলমান থাকায় এই জমিতে বিনিয়োগের প্রাথমিক সুবিধাদি স্থাপন করতে হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে: ৪ লাখ ৮১ হাজার ১৮১ ঘনমিটার ভুমি উন্নয়ন, ৭৪ হাজার ৬০০ বর্গফুট ১০ তলা ভবন নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, ১০ হাজার বর্গফুট আনসার ব্যারাক নির্মাণ, ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ, ইলেকট্রো মেকানিক্যাল ওয়ার্কস, অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ওয়াকওয়ে এবং ইউটিলিটি, পয়ঃনিস্কাশন লাইন, সীমানা প্রাচীর, পাম্প হাউস, আভ্যন্তরীণ কম্পাউন্ড ড্রেইন, বিভিন্ন পর্যায়ে ১৩ জন জনবল নিয়োগ এবং বিভিন্ন ধরণের কম্পিউটার এক্সেসরিজ ও ফার্নিচার সংগ্রহ করা হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-২ এর জমিতে হাই-টেক শিল্প গড়ে তোলার জন্য সহায়ক প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ করে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগ আকৃষ্ট এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। এসব কারণে প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।
উক্ত হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীদের নানা রকম সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে । দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৪টি প্রণোদনা সুবিধা দিচ্ছে সরকার। বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হচ্ছে। এখানে আইওটি পণ্য তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন হার্ডওয়্যার পণ্য এখানে সংযোজন হওয়ার অপেক্ষায়। পুরোদমে চালু হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে প্রায় ১,০০০০০ (এক লক্ষ) লোকের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে। হাই-টেক পার্ক/সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কগুলো সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি পণ্য রপ্তানী মূল কেন্দ্র হয়ে গড়ে উঠবে।