অপরিকল্পিত নগরায়ণে খুলনার সবচেয়ে বড় সমস্যা যানজট। তুলনামূলক সরু সড়কে স্বল্পগতির রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইকের পাশাপাশি চলছে দ্রুতগতির যানবাহন। এতে যানজট, দুর্ঘটনায় ভোগান্তি বাড়ছে নগরবাসীর।
তবে দীর্ঘদিনের এ সংকট নিরসনে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সিটি করপোরেশন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এরই মধ্যে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর ব্যস্ততম ময়লাপোতা মোড় থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত চার লেনের কাজ শুরু হয়েছে। ২৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজের দরপত্র দিয়েছে কেডিএ। একই সঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় নগরীর ফেরিঘাট মোড় থেকে দৌলতপুর হয়ে আফিলগেট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে ব্যয় হবে চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, বর্তমানে সড়কের ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি যানবাহন চলাচল করছে। এ অবস্থায় বিপজ্জনক স্থানগুলোতে সড়কের প্রশস্ততা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুলনা-যশোর রোডে নগরীর ফেরিঘাট মোড় প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়ক চার লেনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যানজট এড়াতে নগরীর শেরেবাংলা রোডে প্রশস্তকরণ কাজের পাশাপাশি গল্লামারীতে দৃষ্টিনন্দন চার লেনের ব্রিজ করা হবে। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। এদিকে গল্লামারী ব্রিজ থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে, সার্ভিস রোড ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা দিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। খুবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান জানান, গল্লামারী-জিরোপয়েন্টে চার লেনের কাজে সড়কের মাঝখানে ১০ ফুট আইল্যান্ড, উভয়পাশে ১৫ ফুট করে সার্ভিস রোড ও একটি ওভারব্রিজ করার প্রস্তাবনাও দেওয়া হয়েছে। সার্ভিস রোড দিয়ে রিকশা-ভ্যানসহ নন-মোটরাইজড যানবাহন চলার সুযোগ থাকবে। ফলে মূল চার লেন সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে না। সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, যেহেতু শহরের এই অংশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, সে কারণে এখানে সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে একদিকে দুর্ঘটনা কমবে, অন্যদিকে দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো তৈরি হবে।