নিউজ ডেস্কঃ
নাগরিক চাহিদা আর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমন্বয়ের মাধ্যমে চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। ঢাকাকে বিভক্তির পর বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ সহায়তায় গত চার বছরে ক্রমান্বয়ে বদলে যাচ্ছে নতুন এ সিটি কর্পোরেশনটি। নগরের সীমানায় নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমেই শত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকাসহ ঢাকা দক্ষিণের পুরো চেহারাতেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। উন্নয়নের স্রোতধারায় বর্তমানে অনেকটা বদলে যাওয়া এক বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত হচ্ছে।
৪ বছর আগে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন অবিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের পুত্র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় এ সিটি কর্পোরেশনের অবস্থা সৃষ্টির পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় চলে গেলেও বর্তমানে তার অনেকটাই বদলে গিয়েছে। তবে ভোটারদের চাহিদার শতভাগ এখনও পূরণ করতে সক্ষম হননি নির্বাচিত এ নগরপিতা। তবে মেয়রকে প্রতিনিয়ত হাজারো সমস্যা আর নানা বাধা অতিক্রম করে জনগণের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে মাঠে কাজ করতে দেখা গেছে। অন্তহীন সমস্যার এ ঢাকা শহরের একাংশের উন্নতিকল্পে কাজ করা মেয়র জনগণের মুখোমুখি হচ্ছেন প্রতিনিয়তই।
বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়েছে শান্তিনগর ও নাজিমউদ্দিন রোডের অধিবাসীরা। নগরীর অন্যান্য এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে ৯শ’ ৬০ কিলোমিটার সারফেস ড্রেন ও পাইপ নর্দমা পরিচ্ছন্ন, নতুন ড্রেন ও ফুটপাথ নির্মাণ করা হয়েছে। জানা গেছে, নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডকে নিয়ে একটি পরিকল্পিত মডেল শহর হিসেবে গড়ে তুলবে ডিএসসিসি। সমাজের অসহায় বৃদ্ধদের জন্য সদরঘাটে বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ করা হচ্ছে।
ঢাকার প্রকৃতি ও সবুজ দৃষ্টিকটুভাবে ঢেকে থাকা অবৈধ বিলবোর্ড ও ব্যানার অপসারণ করে স্থাপন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ডিজিটাল বিলবোর্ড ও এলইডি বক্স। নগরীর যানজট সহনীয় করতে স্থাপন করা হয়েছে যাত্রী ছাউনি, ট্রাফিক সাইন, গার্ড রেইল, বাস স্টপেজ, জেব্রা ক্রসিং, অনস্ট্রীট পার্কিং। সর্বশেষ এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যেতে ১০ টাকার এয়ারকন্ডিশন যুক্ত চক্রাকার বাস সার্ভিসও চালু করেছে। এছাড়া নতুন করে মতিঝিল এলাকায় আরও একটি চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। হকারমুক্ত গুলিস্তানের ফুটপাথে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে দেখা গেছে।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, গত চার বছরে ডিএসসিসি তার সীমানায় আধুনিক প্রযুক্তির ৪১ হাজারের বেশি এলইডি সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ১৮টি ওয়ার্ডে ১৫ হাজার এলইডি বাতি স্থাপনের কাজ চলছে। সিটি কর্পোরেশন ও সরকারের অর্থে প্রায় ৬শ’ ৭০ কিলোমিটার রাস্তা, ৬শ’ কিলোমিটারের বেশি নর্দমা, ১শ’ ৩৩ কিলোমিটার ফুটপাথ নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৬শ’ কিলোমিটার রাস্তা, ৫শ’ কিলোমিটার নর্দমা এবং ১০০ কিলোমিটার ফুটপাথ নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। দয়াগঞ্জে আধুনিক পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাস চালু করা হয়েছে। এছাড়া ধলপুর, লালবাগ ও গণকটুলিতে ছয়তল বিশিষ্ট ৬টি নিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। আরও ৬টির কাজও চলমান রয়েছে। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে শান্তিনগর, নাজিমউদ্দিন রোড, গণকটুলী এবং বংশাল এলাকায় প্রায় চার যুগের জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন করতে সক্ষম হয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪শ’ ৯৭ কিলোমিটার উন্মুক্ত নর্দমা এবং ৫শ’ ৩৭ কিলোমিটার পাইপ ড্রেনের আবর্জনা অপসারণ করেছে বলে জানা গেছে।
ডিএসসিসিতে অধিক নাগরিক সেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে সৃষ্টি হওয়া ঢাকা দক্ষিণের দিকে নজর দেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সরাসরি উন্নয়নের জন্য থোক বরাদ্দ থেকে শুরু করে প্রতিটি উন্নয়ন কাজের জন্য সার্বিক সহায়তদার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে কাজে নামেন মেয়র সাঈদ খোকন।