ডেস্ক নিউজ
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ধুঁকতে থাকা বিশে^র বিভিন্ন দেশকে নিজেদের কাছে মজুদ থাকা সাড়ে ৫ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বিতরণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ বলছে, করোনা টিকার ন্যায্য বিতরণ নিশ্চিতে গঠিত বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে এসব টিকার ৭৫ শতাংশ যাবে লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল, এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ। বাকি ২৫ শতাংশ আঞ্চলিক প্রাধান্যের ভিত্তিতে বণ্টন করবে তারা। টিকা পাওয়ার তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে।
কিছুদিন আগে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় সহায়তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ৮ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বিতরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এবার তার সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশে হিসেবে সাড়ে পাঁচ কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রতিশ্রুতির আড়াই কোটি ডোজ টিকা অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিতরণ শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন জো বাইডেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এবং এর বিভিন্ন প্রজাতির বিরুদ্ধে যেসব দেশ এখনও লড়ছে, সেসব দেশকে আরও বেশি ভ্যাকসিন সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। সে দেশে এখন পর্যন্ত ৩১ কোটির বেশি মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। ফলে হোয়াইট হাউজ এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভ্যাকসিন সহায়তা বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
হোয়াইট হাউজ বলেছে, সাড়ে ৫ কোটি ডোজ টিকার মধ্যে ৪ কোটি ১০ লাখ ডোজ বিতরণ করা হবে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ডোজ যাবে লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চলে। এ ছাড়া ১ কোটি ৬০ লাখ ডোজ যাবে এশিয়া এবং অন্য ১ কোটি ডোজ যাবে আফ্রিকায়।
অন্য ২৫ শতাংশ অথবা ১ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা, ইরাক, ইউক্রেন, পশ্চিম তীর এবং গাজায় আঞ্চলিক অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিতরণ করা হবে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, বিশে^র বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন বিতরণে যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু সমস্যারও মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে বিশ^কে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন ডোজ আছে। কিন্তু এই টিকা পাঠানোর কাজটি এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। ভ্যাকসিনের সুরক্ষা, ব্যবহার বিধি, সতর্কতামূলক বিষয়, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় যথাযথভাবে সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র বলেছেন, এসব টিকা কোথায় যাচ্ছে সে বিষয়ে আমরা আজ ঘোষণা দিয়েছি। আমরা অব্যাহতভাবে টিকার ডোজ পৌঁছানো এবং পরিবহনের ঘোষণা দেব। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এসব টিকা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতে উন্মুখ হয়ে আছি। যুক্তরাষ্ট্র যে সাড়ে ৫ কোটি ডোজ টিকা বিতরণের পরিকল্পনা করেছে, তা ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের কাছ থেকে পাওয়া। যদিও মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকার ব্যবহারেও সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং অন্য যারা করোনাভাইরাসের সর্বাধিক ঝুঁকিতে আছেন, হোয়াইট হাউজ এসব টিকা অগ্রাধিকারভিত্তিতে তাদের দিতে চায়। আন্তর্জাতিক সহযোগীরাও যুক্তরাষ্ট্রের এই সহায়তা নিতে আগ্রহী।