নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের পাওনা প্রায় ৫০০ কোটি টাকা (৬০ মিলিয়ন ডলার) শিগগির পরিশোধ করবে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের অনুরোধে জাতিসংঘ এই টাকা দ্রুত পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছে।
সেনাপ্রধানের অনুরোধের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল তৎক্ষণাৎ ২৫০ কোটি টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন। আর বাকী অর্থ অল্প সময়ের মধ্যে পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন।
বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ৮ ও ৯ জুলাই সদর দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘ সদর দফতরের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।
পরে তিনি সেনাপ্রধানকে বাংলাদেশ মিশনের কর্মপরিধি সম্পর্কে অবহিত করেন। এছাড়া, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন।
সফররত সেনাবাহিনী প্রধান সেক্রেটারি জেনারেলের সামরিক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল কর্লোস উমবার্তো লতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সামরিক উপদেষ্টা বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও মানবিক কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের স্বতঃস্ফুর্ত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ থেকে একজন ফোর্স কমান্ডার নিয়োগের ব্যাপারে প্রস্তাব দেন। সামরিক উপদেষ্টা খুব শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে একজন ফোর্স কমান্ডার নিয়োগের বিষয়ে আশ্বাস দেন।
এছাড়া, সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, স্পেশাল ফোর্স ও র্যাপিডলি ডেপ্লয়েবল ব্যাটালিয়ান মোতায়েনেরও প্রস্তাব দেন।
এ সময় সামরিক উপদেষ্টা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানকে জাতিসংঘ সদর দফতরে একজন কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে শান্তিরক্ষা মিশনের ফোর্স জেনারেশন প্রধান হিসেবে নিয়োগপত্র হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশের ৩১ বছর শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণে প্রথম এই গুরুত্বপূর্ণ পদে বাংলাদেশকে নির্বাচন করা হলো। পাশাপাশি সামরিক উপদেষ্টা রোহিঙ্গা নাগরিকদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন।
এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান সংস্থাটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অফ অপারেশনাল সাপোর্ট মিস লিসা এম বাটেনহেইম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতের সময় সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশ সরকারের পাওনা ৬০ মিলিয়ন ডলার (আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা) পরিশোধের অনুরোধ করেন। সেনাবাহিনী প্রধানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল তৎক্ষণাৎ আড়াইশো কোটি টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার করেন। আর অবশিষ্ট অর্থ দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধের আশ্বাস দেন।
পরে সেনাবাহিনী প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, পিস অপারেশনস মিস্টার জন পিয়েরে ল্যাক্রয় এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে সেনাবাহিনী প্রধান ফরাসি ভাষাভাষী দেশগুলোতে বাংলাদেশের সেনা মোতায়েনের জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টা সম্পর্কে অবহিত করেন। বিশেষ করে চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সেনা পাঠানো বাংলাদেশের তাৎক্ষণিক প্রস্তুতির বিষয়েও সেনা প্রধান তাদের অবহিত করেন।