জালাল উদ্দিন ওমর:
প্রতিবছরের ৯ আগষ্ট জাতিসংঘ ঘোষিত আর্ন্তজাতিক বিশ্ব আদিবাসী দিবস। এবারের আদিবাসী দিবসের শ্লোগান হচেছ ”আদিবাসী জাতিসমুহের অধিকার সংক্রান্ত সকল চুক্তিও অংগীকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন ”। আদিবাসীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবংতাদের সংস্কৃতি, ইতিহাসও ঐতিহ্যকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো সারা বিশ্বজুড়ে বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালিত হয়ে গেল। তবে ৯ আগষ্ট ঈদের ছুটি থাকায় বাংলাদেশে এবার ৩ আগষ্ট বিশ্ব আদিবাসী পালিত হয়। সন্তু লারমার নেতৃত্বে আদিবাসী ফোরাম আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের নিমিত্তে দিবসটি পালন করল। আমরা জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী নীতিমালার সাথে একমত। তাই আমরা আদিবাসীদের শ্রদ্ধা করি এবং তাদের সকল অধিকারের প্রতি সম্মান জানাই। কিন্তু এই আদিবাসী নিয়ে বাংলাদেশে আজ যা চলছে যা রীতিমত বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। শুধু তাই নয় এই আদিবাসী ইস্যুটিকে পুঁজি বানিয়ে পর্দার আড়ালে চলছে পরিকল্পিত ভাবে সুদুরপ্রসারী ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের এক রাজনীতি, যা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং অখন্ডতার বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে মারাত্বক হুমকি হিসাবে দেখা দিবে। সুতরাং আদিবাসী ইস্যুকে নিয়ে চলমান এই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি সম্পর্কে দেশপ্রেমিক জনতাকে আজ সচেতন হতে হবে। তার জন্য আদিবাসী সম্পর্কে আমাদেরকে সঠিক ধারনা লাভ করতে হবে এবং আদিবাসী ইস্যু নিয়ে যারা আজ অতিমাত্রায় সোচ্চার এবং আদিবাসী হতে ও আদিবাসী হিসাবে পরিচয় দিতে যারা অতিমাত্রায় আগ্রহী তাদেরকে চিনতে হবে। একই সাথে তাদের চিন্তা চেতনা , কর্মতৎপরতা এবং এদের আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কেও আমাদেরকে জানতে হবে।
আদিবাসী শব্দটি থেকেই সহজে আমরা এর সম্পর্কে জানতে পারি। ‘আদি’ শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রথম বা শুরু আর ‘বাসী’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে বসবাসকারী। সুতরাং ‘আদিবাসী’ শব্দটি দিয়ে কোন একটি এলাকায় প্রথম থেকে বসবাসকারী লোকজন কে বুঝায়। এটাকে যদি আর একটু ব্যাখা করি তাহলে বলা যায় -১) যে জায়গা আগে কখনোই কারো অধিকারে এবং দখলে ছিল না, এমন স্থানে যারা প্রথম বসতি নির্মাণ করেছিল তারাই আদিবাসী। ২)কোন জায়গায় প্রথম থেকে বসবাসকারী মানবগোষ্টীই আদিবাসী। ৩) আদিম কোন এলাকায় প্রাচীনতম কাল থেকে কিংবা ঐ এলাকা পরিচিতি লাভের সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বসবাসকারী মানবাগোষ্ঠীই হল আদিবাসী। আদিবাসীর সংজ্ঞা এবং পরিচয় নিয়ে এ পর্যন্ত নৃবিজ্ঞানীরা যা বলেছেন তার সারমর্ম হচ্ছে এটাই। সেই হিসাবে সারা বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকটি এবং আদিবাসী জনসংখ্যার পরিমানও একেবারেই কম। এর প্রকৃত কারন হচ্ছে কোন এলাকায় একটি জনগোষ্ঠী প্রথম থেকে বসবাস শুরু করলেও, হাজার বছরের সময়ের পরিক্রমায় তারা হারিয়ে গেছে এবং আধুনিক জীবনের সাথে মিশে গেছে। অর্থাৎ তারা সময়ের সাথে নিজেদেরকে উন্নত করেছে এবং মানব গোষ্ঠীর মুল স্রোতের সাথে মিশে গেছে। তারা নিজেদের সংস্কৃতি,আদর্শ এবং ঐতিহ্যকে হারিয়ে ফেলেছে অথবা বিসর্জন দিয়েছে আর ঐ দেশের বা ঐ অঞ্চলের বিদ্যমান মুল জনগোষ্ঠীর চলমান সংস্কৃতি, আদর্শ এবং ঐতিহ্যকে গ্রহন করে মুল জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে গেছে। সংগত কারনেই কোন এলাকায় প্রাচীন কাল আজ পর্যন্ত নিজস্ব আদর্শ, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য নিয়ে বসবাসকারী মানব গোষ্ঠীর সংখ্যা বিশ্বজুড়ে একেবারেই কম এবং তাদের জনসংখ্যার পরিমানও একেবারেই কম। আর তাই বিশ্বে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এবং জনসংখ্যার পরিমান দুটোই একেবারেই কম। আর সত্য কথা হচ্ছে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী জনগোষ্ঠী নেই।
যদি কেউ এ্ই কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করে এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠী আছে বলে দাবী করে অথবা কেউ নিজেদেরকে আদিবাসী বলে পরিচয় দেয় ,তাহলে তাদেরকে তাদের মতের পক্ষে প্রমাণ এবং দলিলাদি হাজির করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। তবে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, তারা সেটা পারবে না। অর্থাৎ বাংলাদেশে কোন আদিবাসী আছে সেটা আদিবাসী পরিচয় দানকারীরাও প্রমাণ করতে পারবে না। মুলতপক্ষে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই কিছু ব্যক্তি আজ নিজেদেরকে আদিবাসী বলে পরিচয় দিচ্ছে এবং আদিবাসী ইস্যূ নিয়ে কাজ করছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এই পৃথিবীতে মানবজাতির বয়স দশ হাজার বছর অথবা কারো কারো মতে সর্বোচ্চ বিশ হাজার বছর। কিন্তু বিশ বা দশ হাজার বছরের পুরানো কোন মানব গোষ্ঠী বর্তমান পৃথিবীতে নেই। এমনকি পাঁচ হাজার বছরের পুরানো কোন জনগোষ্ঠীও নেই। অথচ বাংলাদেশসহ এশীয় মহাদেশেই মানব বসতির ইতিহাস তিন হাজার বছরেরও বেশী। ভারতের মাটিতে হিন্দু জাতির প্রধান ধর্মীয় নেতা এবং হিন্দু ধর্মের প্রবক্তা শ্রীকৃষ্ণের জন্ম খৃষ্টপূর্ব সময়ে। একইভাবে নেপালের মাটিতে বৌদ্ধ জাতির প্রধান ধর্মীয় নেতা এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধের জন্মও খৃষ্টপূর্ব সময়ে। আর চীনা জাতির মহান নেতা কনফুসিয়াসের জন্মও খৃষ্টপূর্ব সময়ে। শ্রীকৃষ্ণ, গৌতম বুদ্ধ এবং কনফুসিয়াসের জন্মের কয়েক শত বছর আগে থেকেই এতদ অঞ্চলে মানব বসতি ছিল। কিন্তু সেই সময়ের কোন মানবগোষ্টীর অস্তিত্ব এবং বসবাস এখন আর নেই। এখন ২০১৩ খৃষ্টাব্দ। খৃষ্টপূর্ব সময়ের কথা বাদই দিলাম। বাংলাদেশের মাটিতে দুই হাজার বছরের পুরানো কোন জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই। এমনকি এক হাজার বছরের পুরানো জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বও নেই। তাহলে বাংলাদেশে হঠাৎ করে এত আদিবাসী কোত্থেকে এল ?
সরকারী হিসাব অনুসারে, বাংলাদেশে প্রায় ৪৫ টির অধিক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। এরা মোট জনসংখ্যার শতকরা ১.১৩ভাগ। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, দিনাজপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, চাপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, বগুড়া, সিলেট, মৌলভিবাজার, হবিগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাধারনত এসব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। তবে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি , খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানেই এসব ক্ষুদ্র জনগোষ্টীর অধিকাংশই বসবাস করে । এসব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ,মনিপুরি ,গারো, ত্রিপুরা,বম, হাজং, খিয়াং, ম্রো,পাংখো, খুমি,লুসাই,তঞ্চঙ্গ্যা এবং চাক উল্লেখ্যযোগ্য। এসব জাতিগোষ্ঠীর কোনটারই বাংলাদেশে বসবাসের বয়স দুই হাজার বছর তো দুরের কথা এমনকি এক হাজার বছরের বেশী নয়। এদেশে এদের বসবাসের বয়স বড় জোড় ছয়/সাতশ বছর। আদিবাসীর অধিকার নিয়ে যারা কাজ করছেন তারাতো বটেই বরং এসব জতিগোষ্ঠীর লোকেরাও স্বয়ং এসব কথা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন। কারন এটাই সত্য কথা এবং এ কারনেই আদিবাসী বিষয়ক গবেষকদের কছেও বাংলাদেশের কোন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ছয়/সাতশ বছরের বেশী দিনের ইতিহাস নেই। আর সব জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাস নৃবিজ্ঞানীদের মাঝেও নেই এমনকি সংশ্লিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর নিজেদের কাছেও নেই ।
মুলতপক্ষে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক অস্তিরতা এবং শাসক শ্রেনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে এসব জনগোষ্ঠী ভারতও মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে এসে বসবাস শুরু করে। যেমন প্রায় পাচঁশ বছর আগে চাকমারা মায়ানমারের ইরাবতী থেকে বাংলাদেশে আসে। হিমালয়ের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের পামির মালভুমি থেকে ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে চাকরা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে খুমিরা মায়ানমারের আরাকান অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে আসে। প্রায় চারশত বছর আগে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ভারতের ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে আসে। প্রায় পাঁচশত বছর আগে পাঙ্খো জনগোষ্ঠী মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে মারমা জনগোষ্ঠী আরাকান থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। চতুর্দশ শতকে মুরং জনগোষ্ঠী আরাকান থেকে বাংলাদেশে আসে। আর ভারতের মিজোরাম থেকে মাত্র কয়েকশত বছর আগে লুসাই জাতিগোষ্ঠী বাংলাদেশে আসে। এভাবে বাংলাদেশে বসবাসকারী কোন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বয়স এক হাজার বছরের বেশি নয় এবং তারা কেউই বাংলাদেশের মাটিতে আদি কাল থেকে বসবাস করে আসেনি। তারা বিভিন্ন সময়ে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য নিজ জন্মভুমি ছেড়ে বাংলাদেশে এসেছে এবং তখন থেকে এদেশে বসবাস শুরু করেছে। সুতরাং এসব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোনটাই আদিবাসী নয় এবং তারা আদিবাসী হতে পারে না। আদিবাসী হিসাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত যেমন অস্ট্রেলিয়ার এবরিজিন, যুক্তরাষ্ট্রের রেড ইন্ডিয়ান, নিউজিল্যান্ডের মাউরি, দক্ষিন আমেরিকার ইনকা জাতিগোষ্ঠী কিন্তু আদিকাল থেকেই ঐসব অঞ্চলে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে বসবাস করে আসছে এবং এখনো টিকে আছে । অথচ বাংলাদেশে যারা আজ নিজেদেরকে আদিবাসী বলে পরিচয় দিচেছ এবং আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছে তারা কেউই আজ থেকে বিশ বছর আগেও নিজেদেরকে আদিবাসী বলে পরিচয় দেয়নি।
মুলতপক্ষে এসব জাতিগোষ্ঠীর হঠাৎ করে আদিবাসী পরিচিতি ধারন করার পিছনে রয়েছে সুদুরপ্রসারী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং পরিকল্পনা।
পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা হচ্ছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি এবং সঞ্জীব দ্রং হচ্ছে এর সম্পাদক। অথচ এই সন্তু লারমা আজ থেকে বিশ বছর আগেও নিজেকে আদিবাসী হিসাবে পরিচয় দেয়নি এবং তার গোত্রের লোকজনও কখনো নিজেদেরকে আদিবাসী হিসাবে পরিচয় দেয়নি। ১৯৯৭ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারের সাথে পার্বত্য চট্রগ্রামের উপজাতিদের যে শান্তি চুক্তি হয়েছিল , সেখানে উপজাতিদের নেতা ছিল এই সন্তু লারমা এবং তিনি উপজাতিদের পক্ষ থেকে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল । তখনো এই সন্তু লারমা নিজেকে আদিবাসী বলে পরিচয় দেয়নি এবং আদিবাসী নেতা হিসাবে সরকারের সাথে চুক্তি করেনি । একইসাথে সরকারও আদিবাসী নেতা হিসাবে সন্তু লারমার সাথে চুক্তি করেনি বরং পার্বত্য চট্রগ্রামে বসবাসরত উপজাতিদের নেতা হিসাবে সন্তু লারমার সাথে শান্তি চুক্তি করেছিল। আর তিনি তো আদিবাসী নেতা হিসাবে পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান হয়নি বরং উপজাতিদের নেতা হিসাবই পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছেন । তাহলে হঠাৎ করে এই সন্তু লারমার আদিবাসী পরিচয় দেয়ার উদ্দেশ্য কি ? একই সাথে আদিবাসী ফোরামের সভাপতি হওয়া এবং আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য কি ?
সন্তু লারমাদের আদিবাসী হিসাবে পরিচয় দেয়ার পিছনে সুদুর প্রসারী একটা উদ্দেশ্য আছে । আর তা হচ্ছে পার্বত্য চট্রগ্রাম থেকে সকল বাঙ্গালী বিশেষ করে সকল মুসলমানকে উচ্ছেদ করে পার্বত্য চট্রগ্রামের সমস্ত ভুমির নিজেরা মালিক হওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদে পার্বত্য চট্রগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে স্বাধীন করা। নিজেদেরকে আদিবাসী ঘোষনা করে সন্তু লারমারা বুঝাতে চাচ্ছে, তারা হচ্ছে এই পার্বত্য চট্রগ্রামের আদি বাসিন্দা। অর্থাৎ তাদের আগে এই ভুমিতে কেউ বসবাস করেনি । সুতরাং তারাই পার্বত্য চট্রগ্রামের ভুমিপুত্র । অতএব তারাই এই পার্বত্য চট্রগ্রামের সকল ভুমির মালিক এবং কোন বাঙ্গালী এই ভুমির মালিক হতে পারবে না। পার্বত্য চট্রগ্রাম বাংলাদেশের মোট আয়তনের এক দশমাংশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভুমি এই পার্বত্য চট্রগ্রাম প্রাকৃতিক সম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। পশ্চিমা বিশ্ব এই এলাকায় বসবাসরত উপজাতিয়দের জীবনযাত্রার উন্নয়নের নামে মিশনারী তৎপরতা চালাচ্ছে এবং অনেক উপজাতিদেরকে খৃষ্টান ধর্মে দিক্ষীত করছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অদুর ভবিষ্যতে পার্বত্য চট্রগ্রাম একটি খৃষ্টান অধ্যুষিত এলাকায় পরিনত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন হয়ত পশ্চিমাদের সহযোগিতায় পার্বত্য চট্রগ্রামের খৃষ্টান সম্প্রদায় এটাকে পূর্ব তীমুরের মত স্বাধীন রাষ্ট্র করার দাবী করবে ।
মজার বিষয় হচ্ছে পার্বত্য চট্রগ্রামের ভুমির মালিক এইসব উপজাতিদেরকে করার জন্য এই পশ্চিমা বিশ্ব দীর্ঘদিন থেকেই দাবী জানাচ্ছে । একই সাথে বাঙ্গালীদের পার্বত্য চট্রগামের ভুমির মালিক হবার বিরুদ্ধেই পশ্চিমা বিশ্ব অবস্থান । সুতরাং পার্বত্য চট্রগ্রাম নিয়ে কি হচ্ছে এবং সন্তু লারমারা হঠাৎ করে কেন আদিবাসী হয়ে গেল তার প্রকৃত উদ্দেশ্য আমাদেরকে বুঝতে হবে। আর এখনই এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য আমাদেরকে জাতি ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সকল দেশপ্রেমিক জনগন এবং রাজনীতিবিদদেরকে এগিয়ে আসতে হবে । কারন এটার সাথে আমাদের প্রিয় জন্মভুমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং অখন্ডতার বিষয়টি জড়িত । আর সময়ে যেটা সমাধানের যোগ্য , সময়ের ব্যবধানে সেটাই সমাধানের অযোগ্য । সুতরাং এই বাস্তবতা ও আমাদেরকে বুঝতে হবে ।
♦ লেখক: প্রকৌশলী ও কলামিস্ট।