নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর ভোক্তাদের সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ১৭৫ কোটি ১২ লাখ টাকার পণ্য কেনার অনুমতি দিচ্ছে অর্থ বিভাগ। এই টাকার পুরোটাই ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে পাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। যা দিয়ে পেঁয়াজ, চিনি, মসুর ডাল এবং সয়াবিন তেল কিনে খোলাবাজারে বিক্রি করা হবে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই টিসিবির চাহিদা অনুযায়ী ১৭৫ কোটি ১২ লাখ টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়া হবে। ভোক্তাদের সুবিধার জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিক। সরবরাহ চ্যানেলে যাতে কোনোরকম সমস্যা না হয় সে জন্য অর্থ বিভাগ অতি দ্রম্নততার সাথে ব্যবস্থা নিয়েছে। এক বছর মেয়াদের এই গ্যারান্টির অর্থ পণ্য বিক্রি করে টিসিবি পরিশোধ করবে। যদিও টিসিবি দুই বছর মেয়াদি গ্যারান্টি চেয়েছিল।
টিসিবি সূত্রে জানা গেছে. অর্থ বিভাগের সাথে আলোচনার মাধ্যমে টিসিবি পণ্য কেনা শুরু করেছে। এরই মধ্যে কয়েকটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। অন্য চালান পাইপ লাইনে রয়েছে। এখন ব্যাংক গ্যারান্টি হলেই বন্ধর থেকে পণ্য খালাস শুরু হবে। ফলে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা করা যায়।
জানা গেছে, টিসিবি ১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ হাজার টন পেঁয়াজ, ৪০ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭ হাজার টন চিনি, ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ হাজার টন মসুর ডাল এবং ৪৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫ হাজার টন সয়াবিন তেল কিনছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবিকে শক্তিশালী করা ছাড়া বিকল্প নেই। আর বর্তমানে যেভাবে টিসিবি চলছে তাতে খুব ভালো ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বর্তমানে নিত্যপণ্যের দর নিয়ন্ত্রণে সংস্থাটি আশানুরূপ ভূমিকা পালন করতে পারবে। টিসিবি বাজারে না থাকলে বাজার ফের নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যেতে পারে। টিসিবি পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রাখার কারণে পণ্যটির দাম কমে যাচ্ছে। নয়তো এই পেঁয়াজই ভোক্তাদের এখনো শত টাকায় কিনতে হতো। তবে দেশি জাতের নতুন পেঁয়াজ উঠলে টিসিবি বাজারে না থাকলেও হবে। তখন এমনিতেই পেঁয়াজের দর নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
জানা গেছে, সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির পর ব্যবসায়ীরা ভেবেছিলেন, গতবারের মতো এবারও পণ্যটির দাম ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকায় উঠবে। অতি মুনাফার লোভে অনেক ব্যবসায়ী ঢালাওভাবে পণ্যটি আমদানির ঋণপত্র খুলেন। অপরদিকে গতবারের অভিজ্ঞতা থেকে এবার আগেভাগেই প্রস্তুত ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবি। ফলে ভারত নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই টিসিবি নিজ উদ্যোগে পণ্যটি আমদানি করতে থাকে।