আগামী এপ্রিলের মধ্যেই দেশে সচল সব ধরনের অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা নিতে সিনেসিস আইটি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বিটিআরসি জানিয়েছে, মনোনীত প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি করতে হবে। চুক্তির পর থেকে ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে চালু করতে হবে পুরো সেবা। সেই হিসেবে আগামী এপ্রিলের মধ্যেই অকার্যকর হবে অবৈধ মোবাইল সেট।
২০১২ সালে প্রথম দেশে অবৈধ মোবাইল ফোন সেট বন্ধের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর প্রায় আট বছর পর চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার-এনইআইআর ব্যবস্থা চালু ও পরিচালনার জন্য দরপত্র আহ্বান করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এতে রিভ সিস্টেম, ডেটাএজ, ডিজিকন টেকনোলজিস ও সিনেসিস আইটি—এই চার প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এর মধ্যে মোট ৩০ কোটি টাকায় কাজ পায় সিনেসিস আইটি লিমিটেড। আগামী ২ ডিসেম্বরের মধ্যে জামানত জমা দিয়ে চুক্তি করতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক জানান, সহজেই জানা যাবে কোনটা বৈধ আর কোনটা মোবাইল ফোনটি অবৈধ। এপ্রিলের মধ্যেই চালু হবে পুরো ব্যবস্থা।
বিটিআরসি বলছে, ২০২০ সালের আগস্ট মাস নাগাদ প্রায় ১২ কোটি আইএমইআই নম্বর ডেটাবেইজে যুক্ত করা হয়েছে। এর বাইরে থাকা অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধের আগে নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হবে। তবে, সেক্ষেত্রেও রাখা হবে সীমাবদ্ধতা। অর্থাৎ একই ব্যক্তি হয়তো দু-একটা ফোন বৈধ করার সুযোগ পাবেন, একজন অনেক ফোন বিদেশ থেকে নিয়ে এলে তার ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে তা চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে প্রযুক্তিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেসম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন জিতু জানান, যে হ্যান্ডসেটটা ২০ হাজার টাকার, সেই মোবাইল ফোন অবৈধভাবে দেশে ঢুকলে তার দাম ১০ হাজার টাকা। প্রায় ফিফটি পার্সেন্টের কাছাকাছি তফাৎ থাকে সব সময়।
আর প্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ডিভাসগুলো কার কাছে আছে, কে ব্যবহার করছে, প্রত্যেকটা রেজিস্টার্ড কি-না, এসব নজরে থাকলে অবশ্যই ভালো। আসলে অনেক ধরনের প্রতারণার সুযোগ রয়েছে; সেই সব জায়গা থেকে বের হয়ে আসা দরকার।
মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের তথ্যমতে, বছরে ৩ কোটি হ্যান্ডসেট আসে দেশে। যার মধ্যে অবৈধ পথে আসে ৩০-৩৫ শতাংশ, যার বাজারমূল্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকা।