বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে শিক্ষার্থীরা আলাদা লেন পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। তাতে এই সুবিধা রাখা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, দীর্ঘ দুই বছর ধরে পরিকল্পনার পর অবশেষে আলোর মুখ দেখল মাস্টার প্ল্যানটি। বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় এই মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করা হয়।
মাস্টার প্ল্যানের অনুমোদনকে ঢাবির জন্য একটি মাইলফলক বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা মেনেই এই মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের সহযোগিতায় এই মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নেয়া হয়েছে। এই মাস্টার প্ল্যানের ফলে এখন থেকে আমাদের ক্যাম্পাস পরিকল্পনা অনুযায়ী গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, মাস্টার প্ল্যানের ফলে ক্যাম্পাসে যত্রতত্র কিছু করা যাবে না। এখন থেকে সব কিছুই পরিকল্পনা অনুযায়ী করা হবে। পুরো মাস্টার প্ল্যানটি বাস্তবায়ন করতে ৩০ বছরের মতো সময় লাগবে। সেজন্য আমরা এটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছি।
আখতারুজ্জামান আরো বলেন, মাস্টারপ্ল্যানে আমরা অনেকগুলো পরিকল্পনা রেখেছি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, পুরোনো বিল্ডিংগুলো সংস্কার, টিএসসিকে আধুনিক করে গড়া, লাইব্রেরি সংস্কার, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে সোলারের আওতায় আনা, শিক্ষার্থীদের হাটার জন্য আলাদা লেন করা, সাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা লেন করাসহ আরও অনেক কিছু।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, আগে অপরিকল্পিতভাবে বিল্ডিং করায় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। আমরা এখন থেকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ডেভেলপমেন্ট করব। আমরা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করার জন্য দোয়েল চত্বর এবং শাহবাগ মোড় দিয়ে দুটি লেনের ব্যবস্থা করব।
তিনি জানান, এই লেন ব্যবহার করে ছাত্র-ছাত্রীরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ করতে পারবে। এই লেন দিয়ে অন্য কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই মাস্টার প্ল্যানে পরিকল্পিত এবং বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক ও নান্দনিক ক্যাম্পাস তৈরির সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও প্রস্তাবনা রয়েছে। এতে ক্যাম্পাসকে যুগোপযোগী করাসহ ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উৎকর্ষ অর্জনে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আবাসিক চাহিদা মেটানো, আন্তর্জাতিক মানের লাইব্রেরি সুবিধা প্রদান, পার্কিং সুবিধাসহ যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সবুজায়ন, খেলার মাঠ উন্নয়ন, সোলার এনার্জি স্থাপন, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংসহ জলাধার সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধন, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট করাসহ পরিবেশ সংরক্ষণ, আধুনিক জিমনেসিয়াম নির্মাণ, মানসম্মত মেডিকেল সেন্টার স্থাপন ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যৎ ক্যাম্পাস বিনির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে এই মাস্টার প্ল্যানে।