ডেস্ক নিউজ
কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে বিশ্বের সেরা ১০০ বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ৬৪তম স্থান অর্জন করেছে। ২০২১ সালের কনটেইনার পরিবহনের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এ তালিকাটি তৈরি করেছে লন্ডনভিত্তিক বন্দরবিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্ট। বৃহস্পতিবার রাতে লয়েডস লিস্ট তালিকাটি প্রকাশ করে।
কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে বিশ্বের ব্যস্ততম বন্দরের তালিকায় এক বছরেই চট্টগ্রাম বন্দর তিন ধাপ এগিয়ে এসেছে লন্ডনভিত্তিক শিপিংবিষয়ক লয়েডস তালিকায়। ২০২০ সালে একই তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম স্থান অর্জন করেছিল। বন্দর এবং শিপিংবিষয়ক প্রাচীনতম জার্নাল লয়েড’স লিস্ট এই তালিকা ১৮ আগস্ট রাতে প্রকাশ করে। প্রসঙ্গত সমুদ্র পথে দেশের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ৯৮ শতাংশ হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। বাকিটা হয় মোংলা বন্দরে। সম্প্রতি ১০০ বন্দরের ২০২২ সালের সংস্করণ প্রকাশ করেছে জার্নালটি। এই তালিকা তৈরিতে ২০২১ সালের অভিজাত বন্দরগুলোর কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যাকে বিবেচনা করা হয়। জার্নালটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে চট্টগ্রাম বন্দর মোট ৩২ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৮ টিইইউ কনটেইনার পরিচালনা করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। যদিও এর আগের বছর ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭ টিইইউএস কনটেইনার পরিচালনা করেছিল বন্দরে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, আমদানি পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভিড়তে ২০২১-২২ অর্থবছরে একটি কন্টেইনার জাহাজকে আড়াই দিন বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষা করতে হতো। তারপর চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বার্থিং পেতো। আর জেটিতে পণ্য খালাস এবং রপ্তানি পণ্য বোঝাই করতে সময় লাগতো ৩ দিন বা ৭২ ঘণ্টা। কিন্তু এখন বন্দরের জেটিতে ভিড়তে কোনো কন্টেইনার জাহাজকে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। বহির্নোঙ্গরে আসার সঙ্গে সঙ্গে জাহাজ ভিড়ছে জেটিতে। শুধু তাই নয়, জেটিতে জাহাজ ভেড়ার পর আমদানি কন্টেইনার খালাস এবং রপ্তানি পণ্য খালাস করতে সময় লাগছে ২ দিন। চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ দিনের মধ্যে মাত্র তিন দিন বহির্নোঙ্গরে একটি করে কন্টেইনারবাহী জাহাজ বার্থিং এর অপেক্ষায় ছিল। বাকি ১২ দিন প্রতিটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ সরাসরি বন্দরের নির্দিষ্ট জেটিতে গিয়ে পণ্য খালাস করতে পেরেছে। গত ১৫ দিনের মাত্র চার দিন একটি করে বাল্ক কার্গো বা খোলা পণ্যবাহী জাহাজ বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষায় ছিল। বাকি ১১ দিন সরাসরি জেটি বার্থিং পেয়েছে।
এ বিষয়ে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বন্দর গত বছর কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে করোনা মহামারির পরে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ২০২১ সালে বন্দরে কোনো কনটেইনার বা জাহাজের জট ছিল না। গত বছর ৪৯ শতাংশ জাহাজ আসার সঙ্গে সঙ্গে বন্দরে বার্থিং পেয়েছিল। যে কারণে বন্দরকে এই ধরনের প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেছে। বন্দর ব্যবহারকারীদের সর্বাত্মক সহযোগিতার কারণে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, গত বছর বন্দরে কোনো কনটেইনার বা জাহাজের জট ছিল না। ওই সময় ৪৯ শতাংশ জাহাজ আসার সঙ্গে সঙ্গে বন্দরে বার্থিং পেয়েছিল। যে কারণে বন্দরকে এই ধরনের প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেছে। বন্দর ব্যবহারকারীদের সর্বাত্মক সহযোগিতার কারণে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।