ডেস্ক নিউজ
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার হাটবাজারে শীতের সবজির আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি সবজিচাষিরা। এসব সবজির মধ্যে যেগুলো বিষমুক্ত উপায়ে চাষ করা হয়েছে সেগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। এলাকাভেদে কোনো কোনো বাজারে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমবেশি হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে সাধারণত শীতের সবজি উৎপাদন বেশি থাকায় বাজারমূল্য কম থাকত। কিন্তু এবার গ্রামের বাজারেও বেশ উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে শীতের সবজি। এতে আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষক। সুন্দর আবহাওয়ায় এবার শীতের সবজির ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। এর মধ্যে ৮২৩ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত উপায়ে সবজি চাষ করে বাড়তি মুনাফা পাচ্ছেন কৃষকরা। বাজারে বিষমুক্ত সবজির চাহিদা বেশি থাকায় অনেক কৃষক বিষ ছাড়াই সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
সাদুল্যাপুর বাজারের সবজি বিক্রেতা মুন্না সাহা জানান, তার ব্যবসায়িক জীবনে এক যুগের মধ্যে শীতকালে সবজির এত উচ্চমূল্য কখনো দেখেননি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাদুল্যাপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ২৫ টাকায়, শিম ৩৫ থেকে ৪০, বরবটি ৪০, করলা ৪০, ফুলকপি ২৫, বাঁধাকপি ২০, টমেটো ১২০, গাজর ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুলার কেজি ২০, শসা ৩০, পেঁপে ৩০ টাকা ও লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া জানান, সাদুল্যাপুর উপজেলায় এবার এক হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির
শীতের সবজি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিষমুক্ত উপায়ে সবজি চাষ করা হয়েছে ৮২৩ হেক্টর জমিতে। এখান থেকে উৎপাদন হবে প্রায় ৪৭ হাজার মেট্রিক টন সবজি।
স্থানীয় কয়েকজন চাষি জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় তারা আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন। আর বাজারে এবার শীতকালীন সবজির উচ্চমূল্য পেয়ে কৃষকরা আর্থিকভাবে বেশ উপকৃত হচ্ছেন। এমন বাজারমূল্য পেলে কৃষকরা আরও মনোযোগী হবেন কৃষিতে। তাতে বাড়বে সবজির উৎপাদন। তবে বাজারে বিষমুক্ত সবজির চাহিদাই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সচেতন ক্রেতারা বাজারে বিষমুক্ত সবজিই খোঁজেন।
উপজেলার তীলকপাড়া গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম জানান, সবজির বাজারমূল্য পেলে কৃষকরা অনেক বেশি উপকৃত হবেন। এতে কৃষকরা আরও বেশি পরিমাণ জমিতে সবজি চাষে আগ্রহী হবেন। তবে আগামীতে বেশি পরিমাণ জমিতে বিষমুক্ত উপায়ে সবজি চাষ করা হবে। কারণ বাজারে বিক্রি করতে গেলে বিষমুক্ত সবজিই সবার আগে বিক্রি হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান বলেন, কৃষকদের ক্ষেতের শীতকালীন সবজি কেবলমাত্র ফলন দেওয়া শুরু হয়েছে। সামনে আরও বেশি সবজি উৎপাদন হবে। কৃষকরা এখন যে হারে সবজির মূল্য পাচ্ছেন, সে অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে এই হারে মূল্য পেলে আরও বেশি লাভবান হবেন। তবে এবার আগাম সবজির সবচেয়ে উচ্চমূল্য পাওয়ায় কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে কৃষিক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। এর সঙ্গে বিষমুক্ত সবজি চাষ আরও বাড়বে।