নিউজ ডেস্ক:
বিএনপির সকল অসফলতার জন্য দলটির বৃহদাংশ মহাসচিবকে দোষারোপ করায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সূত্র বলছে, শরিক রাজনৈতিক জোট দিয়ে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়া, সাংগঠনিক পুনর্গঠনে ধীরগতি, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে বেগবান করতে না পারা, জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ, কিছু আসনে বিতর্কিতদের মনোনয়ন, নির্বাচিতদের শপথ নেয়া, সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন এবং বগুড়া উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে বিএনপিতে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়ে। দলের অভ্যন্তরে প্রায় সকল নেতাই এসব অসফলতার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলামকে দায়ী করছেন।
নেতারা বলছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিলেও অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিলো না। এতদিন এসব বিষয়ে গোপনে আলোচনা-সমালোচনা হলেও এখন দলীয় বিভিন্ন ফোরামেই জবাবদিহিতার মুখে পড়তে হচ্ছে বিএনপি মহাসচিবকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মির্জা ফখরুল। চরম বিপর্যয়ের কারণে নামসর্বস্ব অনেক দলের অন্যায় আবদার মেনেও বৃহত্তর ঐক্য গঠনে আন্তরিক ছিলেন তিনি। নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের শীর্ষ নেতার অনুপস্থিতিতে বৃহত্তর ঐক্য ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিবের ভূমিকা দলের নেতাকর্মীরা প্রশংসা করেছিলেন। ঐক্যের বিরোধিতা করলেও প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদও করেননি। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন বিপর্যয়ের পরে দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মী পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার পাশাপাশি মির্জা ফখরুলের কঠোর সমালোচনা করতে পিছপা হন নি।
এমন প্রেক্ষাপটে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, যত দোষ নন্দের। আমি মহাসচিব হয়ে দলের সব সিদ্ধান্ত নিজের ইচ্ছে মতো নিয়েছি তাতো নয়। নেতাদের বোঝা উচিৎ- হাইকমান্ড থেকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তা আমি দলে সার্কুলেট করেছি। কিন্তু দোষের বেলায় দোষ শুধু নন্দের। আমি এখন বিএনপিতে নন্দ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছি। দলের সুদিন ফিরলে তখন নেতারা সবাই ক্রেডিট নেবে, তখন আর মহাসচিবের নাম থাকবে না। এটাই এখন বিএনপির রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
দলের নেতাদের পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নেতারা নিজেদের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারলে দলের অবস্থারও উন্নতি হবে। মহাসচিব হিসেবে দলের ভঙ্গুর অবস্থার জন্য দায়ী কেবল আমি একা নই, নিজেরাও একটু নিতে শিখেন।
মূলত দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে এবং শীর্ষ দুই নেতার অনুপস্থিতিতে সর্বোচ্চ পদে মির্জা ফখরুল থাকায় সবাই তার ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায় এড়াতে চাচ্ছেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।