ডেস্ক নিউজ
এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজে-মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্ধ লাখ শিক্ষক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। দীর্ঘদিন যাবত বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বন্ধ রয়েছে মামলার কারণে। এতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। করোনার কারণে বিষয়টি সামনে আসেনি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী মাসের শুরুতেই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
নিয়োগ-সংক্রান্ত একাধিক মামলা দায়ের হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ ছিল। জানা গেছে, করোনা-পরবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে পাঠদান যাতে ব্যাহত বা পিছিয়ে না যায়; সে লক্ষ্যে উক্ত মামলার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে এনটিআরসিএ’র পক্ষ থেকে। মতামত পেলেই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫৭ হাজার ৩৬০টি শূন্যপদের তালিকা পাওয়া গেছে। এই তালিকা মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের তালিকা সংগ্রহ কাজ শেষ করে তা মাঠ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাইরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
এনটিআরসিএ জানায়, চাহিদা চাওয়া হলে এমপিওভুক্ত বিভিন্ন সাবজেক্ট অনুযায়ী, শিক্ষক পদ খালি রয়েছে ৫৭ হাজার ৩৬০টি। ২০১৭ সালে আদালতের নির্দেশনার আলোকে ২০১৮ সালে সংশোধিত এমপিও নীতিমালা জারি করা হয়। আগের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিধান বাতিল করা হয়েছে। এখন শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে।
বিভিন্ন সময় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা উচ্চাদালতে প্রায় ৪০০টি মামলা করায় এনটিআরসিএ’র নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পাস করা প্রায় দুই হাজার প্রার্থী আদালতে মামলা করে তাদের পক্ষে রায় এনেছেন। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল করে এনটিআরসিএ। সারাদেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৭ হাজার শূন্যপদের মধ্যে দুই হাজার বাদ দিয়ে বাকি ৫৫ হাজার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক কাজ শুরু করেছে এনটিআরসিএ।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, সারাদেশে ৫৭ হাজারের বেশি পদ শূন্য থাকলেও আমরা নিয়োগ দিতে পারছি না। ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনের দুই হাজার পদ বাদ দিয়ে বাকি ৫৫ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। গত মাসের মাঝামাঝি আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে এনটিআরসিএ’র পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের পক্ষে মতামত পেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
উলেস্নখ্য, প্রথম থেকে ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনে মেধাতালিকায় ছয় লাখ ৩৪ হাজার ১২৭ জন শিক্ষক যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৮২১ জনের বয়স ৩৫ বছর পার হওয়ায় তারা নিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন
\হনা। ৩৫ বছরের মধ্যে আরও দুই লাখ ৮৮ হাজার নিবন্ধিত প্রার্থী রয়েছেন। তাদের অনেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি নিয়োগ পেয়েছেন। মামলা জটিলতায় অনেকের বয়স পার হলেও চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বর্তমানে প্রায় দেড় লাখ নিবন্ধিত প্রার্থী নিয়োগের অপেক্ষায়। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক এমপিওভুক্ত নীতিমালা-২০১৮ জারির আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২১ জুনের আগে যারা শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেছেন, তাদেরও এমপিও ইনডেক্সধারীদের ক্ষেত্রে বয়সের সময়সীমা কার্যকর হবে না।