নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রভাব খাটিয়ে উদ্দেশ্য হাসিল ও আর্থিক সুবিধা নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিএডিসির প্রকৌশলী মুহাম্মদ বদরুল আলমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা।
সম্প্রতি এ বিষয়ে সচিবালয়ে কৃষি সচিবকে দুই পৃষ্ঠার একটি চিঠি পাঠিয়ে তদন্তের দাবি জানান তারা।
অভিযুক্ত মুহাম্মদ বদরুল আলম বিএডিসির ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক। প্রকল্প এলাকার ভিতর তার নিজ বাড়ি ও শশুর বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায় হওয়া সত্ত্বেও প্রভাব খাটিয়ে ও টাকার জোরে একজন সিনিয়র কর্মকর্তা কে শরিয়ে তিনি পিঠা হন।
অভিযোগটিতে বদরুল আলমের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, এই প্রকৌশলী নিজের শ্যালক ও বন্ধুকে, যিনি বিএডিসিরও কর্মকর্তা তাকে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে রাখেন। এরমাধ্যমে তিনি পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেন। ওই ঠিকাদারের মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
এতে বলা হয়, বদরুল আলমের নেতৃত্বে বিএডিসিতে৷ স্বাধীনতা বিরোধী চক্র কাজ করছে। তারা নিজের অনুসারীদের প্রকল্প প্রধানসহ সুবিধামতো পদায়নে সহযোগিতা করছে। এমনকি তারা সরকার বিরোধীদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। এজন্য তার ওপর গোয়েন্দা নজরদারির আবেদন করা হয়।
এতে বলা হয়, আগেও বিএডিসির তিন প্রকৌশলীকে জঙ্গিবাদে অর্থায়নের জন্য তল্লাশির আওতায় আনা হয়েছিল। এরমধ্যে একজনকে থানায়ও তুলে আনা হয়েছিল। তবে এই চক্র তাকে ছাড়িয়ে আনে। যা বিএডিসি কর্মকর্তা, মোহাম্মদপুর ও মতিঝিল থানা পুলিশ অবগত রয়েছে।
প্রকল্পের জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে এতে বলা হয়, বদরুল আলম ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছেন। নিজের শ্যালককে সুবিধা দেওয়াসহ নিজের ভাইকে তার শালার প্রকল্পে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছেন কিন্তু কোন কাজ না করে বছরের পর বছর বেতন গ্রহন করেছেন। ক্ষমতাবান হওয়ায় এবং বড় সিন্ডিকেটের নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না।
প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলা হয়, একটি সংস্কার প্রকল্পে তিনি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যাচাই-বাছাই করলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। এ কারণে সিন্ডিকেটের বাইরে তিনি কোনো কাজ কাউকে দেন না। ওই ঠিকাদারদের কাছ থেকে তিনি ১৮%-২০% ঘুষ নেন। প্রকল্পের শেষ বছর ভূয়া বিল ভাউচার করে তিনি ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অভিযোগ আছে তিনি অর্থের বিনিময়ে একজন সিনিয়র কর্মকর্তা কে ডিঙ্গিয়ে নিজের গ্রেডেশন ঠিক করেছেন। ময়মনসিংহ প্রকল্পের পূর্বে তিনি আরও একটি প্রকল্প এবং ১২ কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক থাকার সুবাদে আজ তিনি অর্ধশত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এছাড়াও প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এসব অর্থ তিনি হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন। বিষয়টি বিএডিসিতে জানাজানিও হয়েছে।
বদরুল আলমের সম্পত্তির বিবরণ দিয়ে বলা হয়, বদরুলের পাঠানো অর্থে তার বউ এর বড় ভাই বিদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ইউরোপে তার ব্যবসা ও বাড়ি রয়েছে। কিশোরগঞ্জে ৭০-৮০ বিঘা জমি আছে। ঢাকার গুলশান, নিকেতন, মিরপুর ডিওএইচএস ও বেইলি রোডে ফ্ল্যাট আছে। নরসিংদী ও গাজীপুরে ৩০ বিঘা জমির ওপর রিসোর্ট ছাড়াও বহু এলাকায় নামে বেনামে বহু সম্পত্তি আছে তার।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মুহাম্মদ বদরুল আলম বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রকল্প শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। তখন কোনো অভিযোগ আসেনি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।