ডেস্ক নিউজ
রুমার বয়স যখন ছয়, তখন তাকে পিরোজপুর শহরের রাস্তায় ফেলে যান স্বজনেরা। এরপর থেকে তার ফুটপাতে বেড়ে ওঠা। শুরু হয় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালানো। পরে সে শুরু করে ভ্যান চালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পানি দেওয়া। পাশাপাশি চলে সবজি বিক্রি। একসময় বিয়ে হয় রুমার। বিয়ের সাড়ে সাত বছর পর তার একটি ছেলে সন্তান হয়। ছেলে মো. ইব্রাহিমের বয়স এখন বয়স পাঁচ বছর। দুই বছর আগে রুমা ও তার সন্তানকে রেখে স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। আবার একা হয়ে যান রুমা। ভ্যানে পানি দেওয়া ও সবজি বিক্রি করা সামান্য আয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন চলছিল রুমা ও তার সন্তানের। রাতে ফুটপাতই ছিল তাদের ঠিকানা।
স্থানীয় সংবাদকর্মী আবির হাসান সংগ্রামী রুমা ও তার সন্তানের জীবনের কষ্টের কথা তুলে ধরেন সংবাদ মাধ্যমে। এরপর বিষয়টি পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানতে পেরে রুমা বেগমের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের লখাকাঠি গ্রামে রুমা বেগমকে দেওয়া তার ঘরের পাশেই কর্মসংস্থানের জন্য তৈরি করা একটি দোকানের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ, সহকারী কমিশনার ভূমি ফারজানা আক্তার, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান, টোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইমরান আলম খান হারুন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, স্বামী পরিত্যক্তা রুমা বেগম শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। মুজিববর্ষে তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর দেওয়া হয়েছে। আর কর্মসংস্থানের জন্য তার ঘরের পাশে একটি ঘর করে সদর উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের অর্থায়নে পণ্যসামগ্রী কিনে দেওয়া হয়েছে। তার আর কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে না।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, রুমা বেগমের উপহারের ঘরের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও প্রায় ৫০ হাজার টাক ব্যয় করে দোকান ঘর করে দেওয়া হয়েছে। আর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প থেকে ৩০ হাজার টাকার মালামাল কিনে দেওয়া হয়েছে।
রুমা বেগম বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি। দোয়া করি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদের জন্যও। এখন আর আমাকে ভ্যান চালাতে হবে না। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরে থাকবো। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া দোকানে পণ্য বিক্রি করে যে আয় হবে তা দিয়ে চলবো।