ডেস্ক নিউজ
ভাসমান জনগোষ্ঠী এবং কওমি মাদ্রাসাগুলোতে আজ (রোববার) থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশের সব জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার অংশ হিসেবে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর স্কলার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক।
তিনি বলেন, ‘রোববার বিকালে বা সন্ধ্যায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে
ভাসমান জনগোষ্ঠীর টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। একদিনে কত সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে আমাদের প্রস্তুতি থাকবে অন্তত ১ হাজার মানুষকে টিকার আওতায় আনার।’
শামসুল হক বলেন, ‘ভাসমান জনগোষ্ঠীর টিকা নিশ্চিতের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ভাসমান জনগোষ্ঠীর ইতোমধ্যে আমরা একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেছি। এই তালিকায় ২ লাখ ৮৫ হাজার ভাসমান জনগোষ্ঠীর নাম রয়েছে। এটি কম হতে পারে, আবার বেশিও হতে পারে। টিকার বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স সুবিধার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া ৩ লাখ ৩৬ হাজার জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা এই কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাসমান জনগোষ্ঠীর টিকা দেওয়ার ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভাসমান জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কয়েকটি এনজিও কাজ করে। এনজিও ও দুই সিটি করপোরেশন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন নিয়ে আমরা রোববার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করব।’
শামসুল হক বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনতে রোববার ৯টায় মিরপুর জামিয়া কওমি মাদ্রাসায় টিকা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। একদিনে কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে, তাদের তালিকা নিয়ে সে অনুযায়ী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের সব কওমি মাদ্রাসায় টিকা দেওয়া হবে। ধীরে ধীরে এটার প্রসার বাড়ানো হবে। এ জন্য সারাদেশের কওমি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের মিটিং হয়েছে। তারা আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করবেন। যেভাবে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই ১২ থেকে ১৮ বছরের কওমি শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।’
শামসুল হক বলেন, ‘আমাদের টিকার কোনো অভাব নেই। তাই যত শিক্ষার্থীই থাকুক না কেনো, সবাই টিকা পাবে।’
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা টিকা নিতে চায় কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুল হক বলেন, ‘আমরা কওমি মাদ্রাসার টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার আগে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এক বাক্যে বলেছেন, তারা টিকা নিতে চান। একইসঙ্গে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবেন।’
তিনি জানান গ্রামাঞ্চল এবং শহর অঞ্চলের যেসব ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটার শ্রমিকদের তালিকার আওতায় আনতে এরইমধ্যে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে টিকা দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সিলেটের চা বাগানের শ্রমিকদের অগ্রাধিকারে টিকা দেওয়া হয়েছে। এসব জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বেদে পলিস্নতেও টিকা দেওয়া হবে বলে জানান শামসুল হক।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, ‘ভাসমান বা অস্থায়ীভাবে বসবাসকারীদের জনসনের টিকা দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। কারণ এটি সিঙ্গেল ডোজ টিকা।’