নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ছোট্ট দ্বীপ ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ক্যাম্পে ফিরেছে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার ফিরে উখিয়ায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ভাষানচরের সবকিছুই তাদের ভালো লেগেছে।
প্রতিনিধি দলের সদস্য লেদা নতুন রোহিঙ্গা ক্যা¤েপর মো. মোস্তাফা মোবাইল ফোনে আমাদের সময়কে জানান, ভাসানচরের আবাসন প্রকল্প তার খুব ভালো লেগেছে। এখানে মসজিদ, বাচ্চাদের জন্য স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, খেলার মাঠ ছাড়াও প্রতিটি আবাসন প্রকল্পের ভেতর পুকুর রয়েছে। সাগরের মাঝে পুকুরের পানি খুবই সুস্বাদু, যা তার কল্পনার বাইরে। দলের অধিকাংশ সদস্যই আবাসন প্রকল্পের পরিবেশ দেখে মহাখুশি বলে জানান মোস্তাফা।
ভাসানচর পরিদর্শনে যাওয়া রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বিভিন্ন ক্য¤েপর হেড মাঝি, মাঝি ও মসজিদের ইমাম। তারা কক্সবাজার ফিরে রোহিঙ্গাদের কাছে সেখানকার অবস্থা বর্ণনা করবেন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলকে ভাসানচরের আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করানো একটি মোটিভেশনাল কার্যক্রম। সেখানে থাকা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা স¤পর্কে অবহিত হবেন তারা। সরকারের আশা, রোহিঙ্গা নেতারা
এসব দেখে এসে অন্যদের বোঝালে সবাই ভাসানচর যেতে রাজি হবে।
বঙ্গোপসাগরের ভাসানচরে সরকার প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেছে, যাতে কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারবে। এ প্রকল্প ঘিরে প্রায় ১৩ কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্মাণ করা হয়েছে ১২০টি সাইক্লোন সেল্টার, প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও চিকিৎসা অবকাঠামো। বর্তমানে ৩০৩ রোহিঙ্গা ওই চরে বসবাস করছে, যারা সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাচারের সময় বঙ্গোপসাগরে উদ্ধার হয়েছে। সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাদের খাদ্য ও চিকিৎসার মতো মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণ করছে।
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ক্যা¤পগুলোতে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি স্থানে বাস করায় তারা নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। অধিপত্য বিস্তার করছে বিভিন্ন ধরনের অপরাধচক্র। এসব কারণে রোহিঙ্গাদের তুলনামূলক ভালো আবাসনে স্থানান্তর প্রয়োজন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ই জানানো হয়েছে।প্রতিনিধিদলের সদস্যরা মনে করেন, ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাতে পারেন।