এবার এমপিদের বেতনও ৩০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।এছাড়া রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালরাও ‘স্বেচ্ছায়’ নিজেদের বেতন ৩০ শতাংশ কম নেবেন। এর আগে দেশটির মন্ত্রীদেরও বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৭ এপ্রিল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এমপিদের এলাকা উন্নয়ন বা এমপিল্যাড তহবিলের খরচও আগামী দুই বছর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক একজন এমপি প্রতি বছর নিজের এলাকার উন্নয়নে খরচের জন্য ৫ কোটি রুপি করে পান। লোকসভায় ৫৪৩টি ও রাজ্যসভায় ২৪৩টি আসন রয়েছে। দুই বছরে মাথাপিছু ১০ কোটি রুপি ব্যয় সংকোচন হলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের প্রায় সাত হাজার ৯০০ কোটি রুপি সাশ্রয় হবে।
এ দুই বিষয়ে ঐকমত্য তৈরির জন্য রবিবার সব দলের নেতানেত্রীদের ফোন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বেতন কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী দলগুলোও। তবে এলাকা উন্নয়ন তহবিল বন্ধ করা নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি তুলেছে।
কংগ্রেস ও বামরা বলছে, কোনও এমপি চাইলে তার এলাকা উন্নয়ন তহবিলের পুরোটাই নিজ কেন্দ্রে করোনা মোকাবিলায় খরচ করতে পারতেন। সেটা মাস্ক, ডাক্তারদের সুরক্ষার সামগ্রী কেনাই হোক বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়ন। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই তহবিল কোথায়, কীভাবে খরচ হবে, সবটাই ঠিক করবে কেন্দ্রের মোদি সরকার।
এদিকে মন্ত্রী-এমপিদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্তের পর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, আর্থিক জরুরি অবস্থা জারি করে সরকারি কর্মীদের বেতনও কমানো হবে কিনা?
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, সরকারের আজকের সিদ্ধান্ত থেকে প্রমাণিত যে দেশ আর্থিক জরুরি অবস্থার দিকে হাঁটছে।
কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের যুক্তি, সব দলের এমপিরাই করোনা মোকাবিলায় যোগ দিতে চেয়েছেন। সবাই বলেছেন, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন কমানো নিয়ে তার জবাব, ‘সরকারি কর্মীরা তো এক দিনের বেতন ইতোমধ্যেই পিএম-কেয়ারস তহবিলে দিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালরা মাসে যথাক্রমে পাঁচ লাখ, চার লাখ ও সাড়ে তিন লাখ রুপি বেতন পান। প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা অন্য এমপিদের মতোই এক লাখ রুপি বেতন পান। তবে তাদের ভাতার পরিমাণ বেশি। সেই ভাতায় কাটছাঁট হচ্ছে না।
চলতি অর্থবছরে মন্ত্রী-এমপিরা এক লাখ রুপির বদলে ৭০ হাজার রুপি করে বেতন পাবেন। এজন্য এমপিদের বেতন আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করা হচ্ছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা সংকটের নামে বেতন কমানো বা এমপিল্যাড বন্ধ হলেও সাশ্রয়ের অর্থ যে করোনা মোকাবিলাতেই খরচ হবে, তার কোনও বাধ্যবাধকতা থাকছে না। কারণ এই বেঁচে যাওয়া অর্থ পুরোটাই রাষ্ট্রীয় তহবিলে থাকছে। আর কোষাগারের অর্থ সরকারের প্রচারের পেছনেও খরচ করা যায়।