ডেস্ক নিউজ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পোশাকশিল্পের রফতানি পণ্য চুরি প্রতিরোধ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তৈরি পোশাক শিল্প মালিক সমিতি-বিজিএমইএ এবং বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির মধ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১২ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এ সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সদস্যরা অংশ নেন।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি। এ শিল্পে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখাসহ সকল সহযোগিতা প্রদানে তার মন্ত্রণালয় সদা তৎপর। মহাসড়কে যেভাবেই হোক, রফতানি পণ্যের চুরি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতেই হবে। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স বলে তিনি জানান।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চুরি বন্ধের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে সিসিটিভির নজরদারিতে আনার জন্য ক্যামেরা স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। যা আগামী চার মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে তিনি জানান।
মন্ত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চুরি বন্ধের জন্য অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক, হাইওয়ে পুলিশকে প্রধান করে বিজিএমইএ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ এবং বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেন। এ কমিটির মূল কাজ হবে চুরি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) নির্ধারণ করে দেয়া।
মন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করে বলেন, চুরি বন্ধের জন্য হাইওয়ে পুলিশ এখন থেকে শুধুমাত্র হাইওয়ে নয়, সংযুক্ত ফিডার রোডগুলোতেও টহলদারি ও তদারকি আরও জোরদার করবে।
সভায় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে পোশাক খাতের রফতানি ও আমদানির মালামাল চুরির ঘটনা ঘটে আসছে।
তিনি বলেন, এটা মাঝখানে বন্ধ ছিল। এখন আবার ঘন ঘন ঘটছে। এ মহাসড়কে একটি সংঘবদ্ধ চক্র কাভার্ডভ্যানের চালকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে রাতের বেলায় কাভার্ডভ্যান দাঁড় করিয়ে মালামাল চুরি করছে। অনেক সময় কার্টুনের ওজন ঠিক রাখার জন্য তারা কার্টুনে ঝুট, মাটি ইত্যাদিও ভরে দিচ্ছে। পরবর্তীতে যখন উক্ত রফতানি পণ্য আমেরিকা-ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে, তখন কার্টুন খুলে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ আসছে। এতে করে একদিকে সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, অন্যদিকে দেশের সুনামও নষ্ট হচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়।
এ সময় বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই চুরি বন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ চুরি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাবনা দিয়ে বলেন, এ কমিটি চুরি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) নির্ধারণ করার কাজ করতে পারে।
হাইওয়ে পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম বলেন, চুরি প্রতিরোধে রফতানি পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানে বিশেষ স্টিকার দেয়া যেতে পারে।
সভায় বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (জননিরাপত্তা বিভাগের) সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনসহ বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।