ডেস্ক নিউজ
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্ব। সব থেকে ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ ও বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। যে সুন্দরবনকে বলা হয় বাংলাদেশের রক্ষাকবচ, বাংলাদেশের ফুসফুস। সেই সুন্দরবন রক্ষায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি নতুন আরেক বনভূমি সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে এরইমধ্যে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে। খুলনা মহানগরীর খুবই কাছে রূপসা সেতু থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে কাজীবাছা নদীর তীর ঘেঁষে সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে শেখ রাসেল ইকোপার্ক। অনেকে মনে করছেন এটিই হবে বাংলাদেশের আরেক সুন্দরবন বা “মিনি সুন্দরবন”।
২০১৮ সালের ৩ মার্চ এই পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরপরেই প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই সেখানকার দখলদারদের পার্শ্ববর্তী আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন স্থাপনা নির্মাণ ও বনায়নের কাজ চলছে। ইকোপার্কটিকে দৃষ্টিনন্দন করতে বিশেষ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আঞ্চলিক বন সংরক্ষককে ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক সারোয়ার আহমেদ সালেহীনের দেওয়া তথ্যমতে, নয়নাভিরাম নান্দনিক এ পার্কটিতে থাকবে নানা প্রজাতির গাছের ছায়াঘেরা শীতল পরিবেশ। স্থান পাবে সুন্দরবনের গাছ-গাছালি। পার্কের এক অংশে থাকবে সবার প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত। তবে কিছু এলাকা থাকবে একেবারে প্রবেশ নিষিদ্ধ অর্থাৎ প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্য সেখানে থাকবে উন্মুক্ত।
সুন্দরবনের বিভিন্ন গাছ লাগানোর পাশাপাশি সুন্দরবন সম্পর্কে ধারণা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে এখানে। সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্যের ম্যাপ প্রদর্শন করা হবে। হেরিটেজ মিউজিয়াম স্থাপন করে সুন্দরবন এলাকার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রাখা হবে। বনায়ন করে পাখি ও বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা হবে। পার্কটিতে জলাশয়ের উন্নয়ন করে লেক সৃষ্টি করা হবে। লেকের দুই পাশে পায়ে চলার পথ সুসজ্জিত করা হবে। লেকের মধ্য দিয়ে কাঠের রাস্তা (নিচে কংক্রিটের পিলার), ফিস মিউজিয়াম, পানির ওপর ভাসমান রেস্টুরেন্ট করা হবে। ফিস মিউজিয়ামে বিভিন্ন মাছ ও প্রাণীর ফসিল সংরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য সম্বন্ধে সহজে ধারণা দেওয়ার জন্য এখানে ম্যাপ প্রদর্শন করা হবে, জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সারোয়ার আহমেদ সালেহীন আরো জানান, শেখ রাসেল পার্কে থাকবে মিনি সুন্দরবন, ফিশিং জোন, টয় ট্রেন, ঝুলন্ত ব্রিজ, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, ফুড জোন, অবজারভেশন টাওয়ার, পিকনিক স্পট, কিডস কর্নার, অডিটোরিয়াম, থিয়েটার, ফুট ট্রেইল, প্যাকিং জোন, ওয়াকওয়ে, রেস্ট হাউজ, সুইমিং পুল, মেরিন ড্রাইভ, প্লে গ্রাউন্ড, জগিং ট্র্যাক, জিমনেশিয়াম ও রিভার ক্রুজ।
আশাকরা যাচ্ছে আগামী মুজিবর্ষেই এটির শতভাগ কাজ শেষ হবে। কাজ শেষে এটিই হবে বাংলাদেশের মিনি সুন্দরবন। কারণ এখানে সুন্দরবনের পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি জীববৈচিত্র রক্ষার কাজও করা হবে।