ডেস্ক নিউজ
রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্মম নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে মিয়ানমার। সারাবিশ্ব বলছে মিয়ানমারকে বয়কট কর, মিয়ানমারের সঙ্গে সব ব্যবসা বন্ধ কর। আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিচার চলছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিসি) রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পক্ষ ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর ফলে মিয়ানমার যখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে হাঁসফাঁস করছে ঠিক তখনই মিয়ানমারের জন্য এক পশলা সুবাতাস নিয়ে হাজির হলেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব ড. মোহাম্মদ ইউনূস।
১২ লক্ষ রোহিঙ্গাকে ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য করা মিয়ানমারের একটি সংস্থাকে (প্রক্সিমিটি ডিজাইনস) ১৭ কোটি টাকা ঋণ দিল ইউনূসের গ্রামীন ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল (জিসিএ) ফাউন্ডেশন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনূস যেটা করেছেন সেটা মিয়ানমারের জন্য শুধুমাত্র ঋণ নয়, বরং ধুঁকতে থাকা মিয়ানমারকে বিপুল শক্তির যোগান দেওয়া।
ইউনূস সবসময় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন। এর আগে পদ্মা সেতু নিয়ে তিনি সারা বিশ্বে মিথ্যাচার করে বেরিয়েছেন। পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির মিথ্যা গল্পের ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন তিনি। তার কথাতেই পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করেছিল বিশ্বব্যাংক। এই ইউনূসই বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের স্বার্থহানি করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লবিং চালিয়েছেন। আর আজ যখন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের পরিবেশ ও নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হয়ে উঠেছে, তখনও নিজ দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধেই দাঁড়ালেন ইউনূস।
গ্রামীন ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল (জিসিএ) ফাউন্ডেশন নামের যে প্রতিষ্ঠানটি মিয়ানমারের প্রক্সিমিটি ডিজাইনসকে ঋণ দিয়েছে সেটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন ড. মোহাম্মাদ ইউনূস। এর সদরদপ্তর লুক্সেমবার্গে। ২১টি ব্রাঞ্চ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির।
দেশ বিদেশ থেকে কোটি কোটি ডলার অনুদান পাওয়া ইউনূস মিয়ানমারে ঋণ বিতরন করতে গেলেন অথচ দেশে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য তিনি কিছুই করলেন না। সবচেয়ে বড় লজ্জার বিষয় হলো, সারা বিশ্বের শান্তিকামী জনতা যখন মিয়ানমারের শাস্তির দাবিতে ফুঁসছে। তখন শান্তিতে নোবেল জয়ী ইউনূসকে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পক্ষে বিশ্বমঞ্চে একটা শব্দও উচ্চারণ করছেন না। যিনি পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে গলা ফাটাতে পারেন, তিনিই কেমন করে রোহিঙ্গা নিপীড়ন নিয়ে চুপ থাকতে পারেন সে প্রশ্ন উঠছেই। উল্টো তিনি মিয়ানমারকে ঋণ দিয়ে বিশ্বমঞ্চে এই দেশটির পক্ষেই নিজের অবস্থান জানান দিলেন। একই সঙ্গে রক্তপীপাসু সু চির পাশেই দাঁড়িয়ে গেলেন ইউনূস।
রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিষয়ে নিশ্চুপ থাকায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির নোবেল কেড়ে নেওয়ার দাবি উঠছে বিশ্বজুড়ে। ঠিক সেই একই কারণে ইউনূসের নোবেলও কেড়ে নেওয়া উচিৎ বলে মনে করছেন অনেকেই।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, যারা শান্তিতে নোবেল জয় করে বিশ্ববাসী আশা করে যে, তারা মানবতার পক্ষে দাড়াবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলবে। সেটা না করে এই নোবেল জয়ীরাই যখন নৃশংস, নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে তখন প্রশ্ন জাগে নোবেলজয়ী শব্দটা তাদের নামের সাথে থাকলেও সেটার আসলেই কী কোনো মূল্য আছে? ধিক্কার ইউনূস, সু চিদের মতো তথাকথিত নোবেলজয়ীদের, যাদের কাছে মানবতা বড় নয়, নিজেদের স্বার্থ হাসিল করাটাই যাদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়।