এবারের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডল অর্ডারের স্তম্ভ নিকোলাস পুরান। প্রতি ম্যাচেই এই বাঁ হাতির ব্যাটে রান। শুক্রবারও ইংল্যান্ডের বিধ্বংসী বোলিংয়ের মুখে অবিচল ছিলেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর এই ক্রিকেটার। ৭৮ বলে ৬৩ রান তার উইলো থেকে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেন ম্যাচ জয়ী ১৯ বলে ৩৪ রান।
ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত ক্যারিবিয়ানদের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও সচল ছিল তার ব্যাট। ৩৬ রান করেছেন ৪০ বলে। অথচ এই ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারটাই ছিল হুমকির মুখে। নিজেও ভাবেননি আবার ফিরতে পারবেন ক্রিকেটে। কারণ ২০১৫ সালে তিনি ভয়াল সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হন।
যার কারণে তার পরবর্তীকে আর ক্রিকেট খেলারই কথা ছিল না। অবশ্য হাসপাতালে লম্বা সময় চিকিৎসা নিয়ে আজ পুনরায় ক্রিকেট মাঠে । খেলছেন ইংল্যান্ড ওয়েলস বিশ্বকাপে। ২০১৫ সালের ঘটনা। প্র্যাকটিস শেষে বাড়ী ফিরছিলেন পুরান। তখন একটি ছুটন্ত প্রাইভেট কার তাকে চাপা দেয়।
পুরান জানালেন, আমি বাড়ী ফেরার সময় কিছু একটা আমাকে আঘাত করে। বেশী কিছ মনে নেই। পরে দেখলাম আমাকে সেই আঘাত করা কারের কাছ থেকে বের করা হচ্ছে। এরপর অ্যাম্বুলেন্স এল। তোলা হল তাতে। ওহ কি ব্যাথা পায়ে।’ বলেন, পরের দিন যখন ঘুম থেকে উঠলাম, দেখি আমি হাসপাতালে। পায়ে প্লাস্টার।
ব্যাথা আর অনুভূত হচ্ছিল না। ১২ দিনের ওই হাসপাতালে জীবনে আমার দিন কেটেছে ব্যাথা নাশক ঔষধ খেয়ে। এই ক্রিকেটারের বক্তব্য, ডাক্তার আমাকে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছ্ইু বলেনি ফের ক্রিকেটে ফেরার ব্যাপারে। চিকিৎসক বলেন, আমি নিশ্চিত নই তোমার ব্যাট হাতে আমার মাঠে নামার বিষয়ে। তিনি পরিস্কার ছিলেন না আমি আবার ঠিক মতো দৌড়াতে পারবো কিনা।
আমার রক্তচাপ বেড়েই চলছিল। খুবই টেনশনে ছিলাম। তখন আমি স্রেফই প্রার্থনা করেছি। বলতে গেলে সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা চেয়েই আমি সুস্থ হতে পেরেছি। পুরানের দুই পায়ে অপারেশন হয় দুই দফা। এরপর হুইল চেয়ারে কাটাতে হয়েছে ছয় মাস। পুরান জানান, মানসিক ভাবে সেই সময় খুব চাপে ছিলাম। এরপর ফিজিও থোরপির আশ্রয় নিলাম।
সেখানে আমাকে বলা হলো আগে মাসলগুলোর দুর্বলতা দূর করতে হবে। হাঁটুতে শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যায়াম করানো হল। এরপর হাঁটু ভাঁজ করার জন্য চিকিৎসা। কারণ হাঁটুর আর ভাঁজ করানো যাচ্ছিল না। প্রচন্ড ব্যাধা ছিল তখন হাঁটুতে।’ এই ক্যারিবিয়ানের মতে, নিশ্চয়ই তা সুখকর কোনো অভিজ্ঞতা নয়।
আমি মনে করি, ভাগ্যবান একজন হিসেবেই ওই মারাত্মক দূর্ঘটনার পর আবার ক্রিকেট খেলতে পারছি। তা থেকে অনেক শিক্ষা হয়েছে আমার।’ উল্লেখ করলেন, এখন আমি প্রতিটি সিঙ্গেল ম্যাচই উপভোগ করতে চাই। এটাই আমার কাছে আনন্দের। যদিও আমার সন্দেহ ছিল আদৌ ব্যাট হাতে নামতে পারবো কি না। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করেছি খেলার বিষয়ে। আমি আমার পরিবার এবং বান্ধবীকে বলেছিলাম ২১ বছর বয়সেই আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে খেলবো। সূত্র: ডেইলি মেইল