নাটোর সদর উপজেলার পাইকৈড়দোল গ্রামের কৃষক সাহেব আলীর ছেলে বাবলু রহমান। ছোট থেকেই পড়াশুনাই বেশ মনোযোগী ছিল বাবলু। তার পড়াশুনায় মনোযোগ দেখে দর্রিদ কৃষক বাবা তাকে পড়াশুনার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে তাকে প্রাথমিক থেকে উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশুনা করান। এরপর তার উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্নের কথা শুনে পুনরায় তাকে পড়াশুনা করানোর চেষ্টা করেন। এভাবেই এক বেলা খেয়ে না খেয়ে পরিশ্রম করে তাকে কলেজে ভর্তি করে দেয়। সেখানেও তার ফলাফল ভালো হওয়ায় এবার তার বাবা ও মা আরো পড়াশুনা করতে বলে। এরপর বাবলু নিজের পরিশ্রমে এবং বাবা ও মায়ের স্বপ্ন পুরনের চেষ্টায় এম এ পাশ করেন। এম এ পাশ করার পর বাবলু সহ তার মা বাবা তাকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। তাদের ছেলে ভালো একটা চাকুরী করবে দেশের জন্য ভালো কিছু করবে। এই স্বপ্ন নিয়েই বাবলু শুরু করে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে চাকুরীর চেষ্টা। দিতে থাকে শুধু পরিক্ষা আর পরিক্ষা। কিন্তু কোন ভাবেই তার ভাগ্যে কোন সরকারী চাকুরী জোটেনি। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে সংসারের হাল ধরতে এবং জীবিকার তাগিদে একটি এনজিওতে চাকুরীতে যোগদান করেন বাবলু। এভাবেই পরিবার পরিজন নিয়ে কোন রকমে জীবন যাপন করছিলেন সে। এরপরই নেমে আসে তার জীবনে আরেকটি করুন কাহিনী। হঠাৎকরেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসা করতে গিয়ে ভুল ডায়াগনস্টিক এবং ভুল চিকিৎসায় সে সহ তার পরিবারের সবাই সর্বশান্ত হয়ে যায়। একদিকে ভুল চিকিৎসা অন্য দিকে নতুন করে সঠিক চিকিৎসা করানো তাদের পক্ষে আর সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এখন চিকিৎসার অভাবে ধীরে ধীরে জীবনের শেষ প্রান্তে চলে যাচ্ছে বাবলু। বাবলুর সঠিক চিকিৎসা করে সুস্থ্য হতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকার প্রয়োজন। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে বাবলুর পরিবারের আবেদন যদি তারা বাবলুর চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন তাহলে বাবলু আবার পরিবার পরিজন নিয়ে সুন্দর করে বাঁচতে পারে।
বাবলু রহমান বলেন, প্রায় দেড় বছর পূর্বে হঠাৎ করেই তিনি একদিন অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করেন তিনি। ব্যাথা শুরু হলে তখন তারা সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। ব্যাথঅ সহ্য করতে না পেরে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে রেফার্ড করা হয়। এক পর্যায়ে আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খিদের পরামর্শে বাবলু ভর্তি হন রাজশাহী পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে ভর্তির পরে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তাকে জানানো হয় তার ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে। এখন বেশ কিছু দিন এখানে ভর্তি হয়ে বিশ্রাম নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। চিকিৎসকের কথামতো বেশ কিছুদিন সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ্য না হওয়ায় তিনি সেখান থেকে ঢাকার নারায়নগঞ্জ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয়। এরপর সেখানেও বিভিন্ন পরীক্ষা করে তাকে জানানো হয় তিনি খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর সেখানেও বাবলু দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েও কার কোন সমস্যার সমাধান হয়না। এদিকে এভাবে চিকিৎসা করাতে করাতে তাদের সঞ্চয় সহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ধান দেনা করে প্রায় ২ লাখ টাকার বেশী খরচ করে বাবলুর পরিবার। অবশেষে শেষ ভরসা হিসেবে তিনি চলে যান ভারতে চিকিৎসা করাতে। ভারতের কোলকাতা এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয় বাবলু। সেখানে পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে তাকে জানানো হয় তার ব্রেন টিউমার হয়েছে। আগামি দুই মাসের মধ্যে তার অপারেশন করতে হবে। আর অপারেশনের খরচ লাগবে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা। কিন্তু এখন তিনিও তার পরিবার একেবারেই নিঃস্ব। ধার দেনা করার মত পরিচিত আর কোন মানুষ তাদের নেই। এ অবস্থায় অপারেশনের টাকা যোগার করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি তার চিকিৎসা ও সুস্থ্য হওয়া নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। যদি কেউ সাহায্য করেন তাহলে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে পারেন। স্থানীয় হরিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গণি ভুঁইয়া বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে তাকে সহায়তার জন্য সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সহযোগীতার জন্য নারানগঞ্জ এর নবাবগঞ্জ শাখা সোনালী ব্যাংক সঞ্চয় হিসাব নং ৩৬১২৯০১০০৯৭ বা বিকাশ (পারসোনাল) মোবাইল নং ০১৭২৫-৬২২৪৭৪।