নিউজ ডেস্ক:
বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে রিফাত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এ পুরস্কারের ঘোষণা দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক বলেন, দেশব্যাপী আলোচিত বরগুনার রিফাত হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত প্রধান অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য রিফাতের হত্যাকারীদের ধরিয়ে দিতে এ পুরস্কার ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ।
তিনি আরো বলেন, যদি কেউ রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান অভিযুক্তদের ধরিয়ে দিতে পুলিশকে সহযোগিতা করেন তাহলে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ তার নাম-পরিচয় গোপন রেখে উপযুক্ত পুরস্কার দেবে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত রিফাত শরীফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আ. হালিম দুলাল শরীফ। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নয়নের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা রিফাতকে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায়। এ সময় বারবার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
একপর্যায়ে গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রিফাত মারা যান।
রিফাত শরীফকে হত্যার পরদিন ১২ জন আসামির নাম উল্লেখ করে মামলা করেন তার বাবা মো. আ. হালিম দুলাল শরীফ। মামলায় পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন (২৫)। বাকি আসামিরা হলেন মো. রিফাত ফরাজী (২৩), মো. রিশান ফরাজী (২০), চন্দন (২১), মো. মুসা, মো. রাব্বি আকন (১৯), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রায়হান (১৯), মো. হাসান (১৯), রিফাত (২০), অলি (২২) ও টিকটক হৃদয় (২১)।
এরই মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি চন্দন, ৯ নম্বর আসামি মো. হাসান, ১১ নম্বর আসামি অলি ও ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া রিফাত হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তানভীর, নাজমুল হাসান, মো. সাগর ও কামরুর হাসান সাইমুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
বরগুনার এসপি মারুফ হোসেন বলেন, রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।