ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশের পরমাণু বিদ্যুতের ইতিহাসে আজ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের প্রধান যান্ত্রিক অবকাঠামো ভিভিইয়ার-১২০০ চুল্লিপাত্র বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপন শেষে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত থেকে এর উদ্বোধন করবেন। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচভসহ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরমাণু-সংশ্লিষ্টদের মতে, নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেলকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ‘হৃৎপি-’ বলা হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান গতকাল প্রকল্প এলাকায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় ইউনিটের রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেল আগামীকাল বসানো হচ্ছে। এ ধরনের প্রকল্পে যেসব দেশ পরমাণু প্রকল্প নির্মাণের এই স্টেজে থাকে, তারা বিশ্বকে জানান দিতে চায় নিজেদের অগ্রগতির কথা। কিছুদিন আগে আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার (আইএইএ) জেনারেল কনফারেন্সে নিজেদের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেছিলাম। ওই কনফারেন্সে বিশ্বের বড় বড় পরমাণু শক্তিধর দেশগুলো এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের পারমাণবিক প্রকল্পের এ অগ্রগতিতে হতবাক হয়ে যায়। তারা এটা বিশ্বাস করেছে যে, বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের আন্তরিকতার জন্য এত কম সময়ে এই অগ্রগতি আমরা অর্জন করেছি। এবার কনফারেন্সে নতুন দেশগুলোর মধ্যে যারা পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে শুরু করেছিল, তাদের মধ্যে একটি দেশ আমাদের প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। দেশটি তাদের কাজ এগিয়ে নিতে পারছে না বলেই আমাদের এখানকার শ্রমিকদের কাজ দেখে বাংলাদেশি শ্রমিকদের তাদের দেশে নিয়ে যেতে আগ্রহী।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ফিজিক্যাল অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষের পথে। এ জন্যই অন্য দেশ আমাদের এই শ্রমিকদের নিয়ে যেতে চায়। আমি মনে করি এটি আমাদের একটি বড় অর্জন। আমরা দেখেছি যে বাংলার সাধারণ ছেলেরা কী অসাধারণ কাজ করতে পারে। আমাদের ফিজিক্যাল প্রগ্রেস ফিন্যান্সিয়াল প্রগ্রেসের চেয়ে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এ প্রকল্পে সবাই একাগ্রতার সঙ্গে কাজ করছেন। সরকারও শতভাগ স্বচ্ছতা রক্ষা করেই কাজ করছে। আমরা হাজারখানেকের ওপর লোকবল নিয়েছি, যারা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। যেহেতু ন্যাশনাল সিকিউরিটির সঙ্গে এই প্রকল্প জড়িত, এ জন্য এর সঙ্গে সেনাবাহিনীও রয়েছে। রূপপুর প্রকল্পের এটি পঞ্চম ইভেন্ট, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।’ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আমাদের অর্থনৈতিক লেনদেনে যে সমস্যা ছিল তা দুই পক্ষই সমাধানে চেষ্টা করছে। আর এ জন্য কাজের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। আর প্রকল্পটি আমরা একটি ফ্রেমের মধ্যে করছি। এ জন্য এর ব্যয় বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। আগামী বছরের মধ্যেই প্রথম জ্বালানি, ইউরেনিয়াম আসবে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুত হচ্ছি।’