উপকূলীয় এলাকায় বোরো মৌসুমে লবণাক্ততা সহনশীল এবং আউশ মৌসুমে চাষের উপযোগী আরও তিনটি উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) গবেষকরা। এই নিয়ে উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত দাঁড়াল ১০৫-এ। ইতোমধ্যে উদ্ভাবিত নতুন তিন জাতের ধানের অনুমোদনও দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড। নতুন এ ধানের নাম দেওয়া হয়েছে ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৯ ও ব্রি ধান৯৮। বোরো মৌসুমে উপকূলীয় লবণাক্ততা অঞ্চলের আবাদের জন্য ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৯ এবং পুরো দেশে আউশ মৌসুমে চাষাবাদের জন্য ব্রি ধান৯৮ অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।
আউশ মৌসুমে চাষের উপযোগী ব্রি ধান৯৮ জাতের ফলন প্রতি হেক্টরে ৫.০৯ থেকে ৫.৮৭ টন। এর দানা লম্বা ও চিকন। এ জাতের ধানের দানার রং সোনালি। এ জাতের জীবনকাল ১১২ দিন যা রোপা আউশ মৌসুমের জাত বিআর২৬-এর সমান। এক হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ২২.৬ গ্রাম। ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৭.৯ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৯.৫ ভাগ। ভাত ঝরঝরে। ব্রি ধান৯৭ ও ব্রি ধান৯৯ বোরো মৌসুমে চাষের উপযোগী। এ জাতগুলো চারা অবস্থায় ১৪ ডিএস/মি এবং পুরো জীবনকাল ৮-১০ ডিএস/মি লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। ব্রি ধান৯৭-এর গড় জীবনকাল ১৫২ দিন এবং গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৪.৯ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টরপ্রতি ৭ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। গাছের গড় উচ্চতা ১০০ সেন্টিমিটার ও ডিগপাতা খাড়া। এর চাল মাঝারি মোটা হওয়ায় বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর ও খুলনা অঞ্চলে অধিক জনপ্রিয় হবে বলে প্রত্যাশা বিজ্ঞানীদের। ব্রি ধান৯৯-এর গড় জীবনকাল ১৫৫ দিন এবং গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৫.৪ টন। এর চাল লম্বা ও চিকন হওয়ায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে অধিক জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় তিন বছর গবেষণার পর এ তিনটি নতুন জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে।
গত মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তিনটি ধানের জাত অনুমোদন দেওয়া হয়।