ডেস্ক নিউজ
কড়া নাড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আগামী ১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শতবর্ষপূর্তি উৎসব উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে বর্ণিল সাজে সজ্জিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, কলা ভবন, ভিসি চত্বর, স্মৃতি চিরন্তন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবন, টিএসসি চত্বর, সামাজিক বিজ্ঞান ভবনসহ পুরো ক্যাম্পাস এবং ফুলার রোডসহ আশেপাশের বিভিন্ন সড়ক লাল, সবুজ, নীল রঙের বাতির আলোয় সাজানো হয়েছে। এছাড়া ‘শতবর্ষের আলোয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে বক্স ও বিভিন্ন ধরণের প্ল্যাকার্ড রঙ্গিন আলো ছড়াচ্ছে ক্যাম্পাস জুড়ে।
রীতিমতো উৎসবে পরিণত হয়েছে ঢাবি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী কিংবা ক্যাম্পাসের রাস্তায় যাতায়াতকারী সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বর্ণিল এ আলোকসজ্জা। শিক্ষার্থীরা সুন্দর মুহূর্তগুলোর সাক্ষী হওয়ার জন্য ছবি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাদ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নতুন সাজে নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন নববধূর সাজে সজ্জিত হয়ে বসে আছে আমার প্রাণের ক্যাম্পাস, আমার প্রিয় শিক্ষাঙ্গন, প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, সত্যি বলতে আমি খুবই এক্সাইটেড। এমন মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরে আমি গর্বিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ আমাদেরকে এমন আনন্দঘন পরিবেশ উপহার দেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, শতবর্ষ উদযাপনে আমরা কোনো কিছুর কমতি রাখব না। ক্যাম্পাস সাজসজ্জার কাজ শুরু হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ক্যাম্পাসকে বর্ণিলভাবে সাজানো হবে। আশা করছি শিক্ষার্থীরা প্রাণভরে উপভোগ করতে পারবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শতবর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে আমরা নানান কর্মসূচি, নানান উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। ক্যাম্পাসের এই বর্ণিল সাজ তারই অংশ। যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বর্ণিলভাবে শতবর্ষ উদযাপনে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই লোটে শেরিং ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শতবর্ষের তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও শতবর্ষের থিম সং পরিবেশন করা হবে। এছাড়া, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ, ফটোগ্রাফি অ্যালবাম ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এবং ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ওই দিন বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আলোচনা সভা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।