ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির চালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। তিনি বলেছেন, ‘সীমান্তে শুধু বাংলাদেশি নয় ভারতীয়রাও নিহত হচ্ছে। দুই দেশের সম্মিলিত পদক্ষেপে এ ধরনের ঘটনা নিরসন করতে হবে। পারস্পারিক সমঝোতার মাধ্যমে আগামীতে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বহুগুণে বাড়বে।’ আজ মঙ্গলবার রংপুরের পৃথক ৩টি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘সীমান্তে যে কোনো হত্যাকাণ্ডে বা হতাহত উভয় দেশের জন্য দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত। দুই দেশের সম্মিলিত পদক্ষেপে এ ধরনের ঘটনা নিরসন করতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত কাজ করছে। বিএসএফ-বিজিবি সীমান্ত রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে। চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্ত সেনারা কাজ করে যাচ্ছে। চোরাচালান বন্ধে দুই দেশেরই কঠোর ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষীকে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, যদি তাদের ওপর হামলার কোনো শঙ্কা না থাকে, তবে যেন সীমান্তে কোনো অবস্থাতেই গুলি না চালায়। আমরা কোনো দেশেই সীমান্ত হত্যা চাই না।’
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘মাদক চোরাচালান দুই দেশের সমস্যা। বিশেষ করে ইয়াবা ও আইসের মতো ভয়ানক মাদক চোরাচালান বন্ধে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। এটা যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। বিজিবি-বিএসএফকে যৌথভাবে মাদক চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছি। আশা করা হচ্ছে, আমরা ভালো ফল পাবো।’
তিস্তা নদী বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকার খুবই আন্তরিক।’ এ সময় তিস্তার পানিবণ্টন, উন্নয়নে অংশীদারিত্ব, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে জটিলতা রয়েছে উল্লেখ করে দোরাইস্বামী বলেন, ‘চুক্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। এ দেশ হচ্ছে ভারতের প্রথম সারির ব্যবসায়িক অংশীদার। আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগীও বাংলাদেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোংলা ও মিরসরাইয়ে ভারতের দুটো অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতের বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিশেষ করে অটোমোবাইলের যন্ত্রাংশ উৎপাদন, হালকা প্রকৌশল পণ্য উৎপাদন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকে।’
আজ সকালে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে আরসিসিআই অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য ত্বরান্বিতকরণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। দুপুরে তিনি উপহারস্বরূপ রংপুর সিটি করপোরেশনকে দেওয়া লাইফ সাপোর্ট সংবলিত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্সের চাবি সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার হাতে তুলে দেন।
পৃথক অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার (রাজশাহী) সঞ্জিব কুমার ভাট্টি, এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রংপুর চেম্বারের সাবেক সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু, দিনাজপুর চেম্বারের সভাপতি রেজা হুমায়ুন ফারুক চৌধুরী শামীম, বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু সায়েদুজ্জামান, সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিঞা ও প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু প্রমুখ।