নিউজ ডেস্ক :
ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ ১২ নেতা নিজেদের ঘাড়ের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টায় সমালোচিত হচ্ছেন। ছাত্রদলের এসব নেতার পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলে সমালোচিত হচ্ছে খোদ বিএনপিও।
বুধবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত নেতারা দাবি করেছেন, ‘আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রদলের কেউ জড়িত ছিলেন না। কোনও স্বার্থান্বেষী মহল আন্দোলনের নামে এসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে।’ যদিও বয়সসীমা তুলে দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠন ও পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবিতে গত ১১ জুন থেকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে টানা আন্দোলন করেন সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রদলের এ বিক্ষুব্ধ নেতারা। আন্দোলনকারীরা বিএনপির কার্যালয়ে ভাংচুরও করেন। এমনকি দলের শীর্ষ নেতাদের কার্যালয়ে আটকের রাখাসহ মারমুখী অবস্থান নেয়। এজন্য গত ২৩ জুন ছাত্রদলের ১২ নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়।
সূত্র বলছে, দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি এ এ জহির উদ্দিন তুহিন আন্দোলনে ছাত্রদল জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন। লিখিত বক্তব্যে জহির উদ্দিন তুহিন বলেন, ‘ছাত্রদলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় একপর্যায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা আমাদের ব্যথিত ও মর্মাহত করেছে। এ ধরনের ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং কারো জন্য কাম্য নয়।’
দলের অনুগত এবং বিশ্বস্ত কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলেও বিশ্বাস করেন না দাবি করে তুহিন বলেন, ‘এলোমেলো পরিস্থিতি ঘটে যাওয়ার কারণে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে অনুগত থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনাবলি পালনে অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।’ তুহিন বলেন, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীরা সংগঠিত আন্দোলন বিষয়ে জড়িত নই। এরা হলেন−এজমল হোসেন পাইলট (বহিষ্কৃত), ইখতিয়ার কবির (বহিষ্কৃত), জয়দেব জয় (বহিষ্কৃত), এ এ জহির উদ্দিন (বহিষ্কৃত), আসাদুজ্জামান আসাদ (বহিষ্কৃত), মো. বায়েজীদ আরেফীন (বহিষ্কৃত), গোলাম আজম সৈকত (বহিষ্কৃত), মজিফুর রহমান আশিক, মো. রাসেল, কাজী মোখতার হোসাইন প্রমুখ।
এমন বাস্তবতায় রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা উঠেছে যে, বিএনপির অঙ্গ-সংগঠন বলেই ছাত্রদলও বিএনপির মতো এক ইস্যুতে দুই কথা বলছে। এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, স্বার্থের জন্য বিএনপি যখন তখন রঙ পাল্টাতে পারে- এই সত্য সর্বজনস্বীকৃত। তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলও একই কাজ করেছে। পদ ফিরে পেতে তারা এখন অন্যকারো ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। অথচ সারা দেশের গণমাধ্যমের বরাতে সবাই জানে তাদেরই নিকৃষ্টতা।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুন বিএনপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ২০০০ সালের পরের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার শর্ত আরোপ করে। এরপর বয়সসীমা উঠিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত ১১ জুন থেকে বিক্ষোভ করে আসছেন ছাত্রদল নেতাকর্মীদের একাংশ।