ডেস্ক নিউজ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সংগঠন মেরামত করবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ২০২৩ সালের পুরো সময়টা দেশ-বিদেশে সরকারের ইতিবাচক অর্জনগুলো তুলে ধরবেন দলটির নেতারা। আগামী জানুয়ারি থেকে ভোটের রাজনীতিতে মনোযোগী হবে আওয়ামী লীগ। এর আগে সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা, ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলনের মাধ্যমে গুছিয়ে আনা হবে। আগামী মাসের মধ্যেই ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ মেয়াদোত্তীর্ণ ৩৩ জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করবে ক্ষমতাসীন দলটি। ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন এছাড়া ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগের সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জানুয়ারি থেকে মনোযোগী হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে।
সূত্র মতে, ১১ এজেন্ডা নিয়ে আগামী ২৮ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকেই আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হবে। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। ডিসেম্বরে রংপুর সিটি নির্বাচন, বিএনপির সভা-সমাবেশ, আন্দোলন নিয়েও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মসূচিসহ নানা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে ওই বৈঠকে। এছাড়া সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর গ্রুপিং ও পদ-বাণিজ্যে জড়িত নেতাদের সতর্ক করার পাশাপাশি সম্মেলনের মধ্যদিয়ে কমিটিগুলোতে নতুন নেতৃত্ব আনার তাগিদ আসতে পারে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সম্মেলন হবে। ২৮ অক্টোবর দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে। এছাড়া সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনের সম্মেলনেরও দিকনির্দেশনা দিতে পারেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানিয়েছেন, গত বারের ন্যায় এবারও একমঞ্চে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগসহ সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন করার পরিকল্পনা রয়েছে। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের এসব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষ্যে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। দলের গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংশোধন ও সম্মেলন সফল করা নিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম আলোকিত বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, আগামী মাসের মধ্যেই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে।
দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে তৃণমূল অর্থাৎ জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিগুলোকে হালনাগাদ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে। জেলা-উপজেলায় পুরোদমে সম্মেলন শুরু হয়েছে। সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনেরও সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। তবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ভোট নিয়ে ভাবছে না। সংগঠনকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করার পর ভোটের রাজনীতি পুরোদমে শুরু করবে দলটি।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলেছে, আগামী জানুয়ারি থেকে ভোটের জন্য মাঠে নামবে দলটি। নির্বাচনি প্রচারযুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন এবং বিএনপি-জামায়াতের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডকে প্রাধান্য দেবে দলটি। ভোটারদের কাছে টানতে গত ১৩ বছরের বিভিন্ন উন্নয়ন বেশি বেশি প্রচার করবে আওয়ামী লীগ।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমরা আপাতত সংগঠনকে নিয়ে ভাবছি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয়, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, জেলা ও মহানগরের সম্মেলন শেষ করা হবে। ‘ভোট উপযুক্ত’ নেতৃত্ব বাছাইয়ের মাধ্যমে পরবর্তীতে আমরা নির্বাচনি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামব।