ডেস্ক নিউজ
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে জীবনের সর্বস্তরে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জর্দানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি। জর্দানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আল হুসাইনের পক্ষে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি ওই মন্তব্য করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত ‘মুজিব চিরন্তন’ উদযাপনের অনুষ্ঠানে গতকাল রবিবার ওই ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।
বক্তব্যের শুরুতেই আয়মান সাফাদি বাংলাদেশের জনগণকে ‘ভাই ও বোন’ উল্লেখ করে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, ‘শান্তি, ন্যায়বিচার ও সম্মানের প্রতি অভিন্ন নীতি থেকে আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক চমৎকার। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থায় (ওআইসি)। আমরা সেখানে সহযোগিতা, সংঘাত নিরসনসহ সবার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে কাজ করি।’
জর্দানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা বাড়াতে চাই। আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও সংকট সমাধানে কাজ করতে চাই। বিশেষ করে শরণার্থী, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই। দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে সমন্বিত শান্তি এবং জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলো রক্ষা করার বিষয়ে কাজ করতে চাই।’
জর্দানের উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত পাঁচ দশক বাংলাদেশে জীবনের সর্বস্তরে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। এই অগ্রগতি জনগণের প্রাণোচ্ছলতার বহিঃপ্রকাশ।’ সৃষ্টিকর্তার কাছে বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জনগণ স্থিতিশীলতা আরো সুসংহত, আরো উন্নতি করবে এবং সম্ভাবনা কাজে লাগাবে।’
১০ দিনব্যাপী ‘মুজিব চিরন্তন’ আয়োজনের পঞ্চম দিন গতকালের আলোচনার প্রতিপাদ্য ছিল ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে দেশকে পুনর্গঠন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশকে বিরানভূমিতে পরিণত করেছিল। তিনি সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবনের জয়গান গেয়েছিলেন।
প্রতিপাদ্যভিত্তিক আলোচনায় বক্তা হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে যাওয়া দেশে পরিণত হয়েছে। এর ভিত্তি রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতিহাসের মহাফলকে অবিরাম যাঁর নাম লেখা হয়, তিনি বঙ্গবন্ধু। হাজার বছরের পূর্বপুরুষদের পরাজয়ের শোধ নিয়েছিলেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশকে স্বাধীন করার পর নতুন সংগ্রাম শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি পুনর্গঠন করেন। দেশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত ছুটে বেড়িয়েছেন। বুকজুড়ে ৫৪ হাজার বর্গমাইল ফুলে ফুলে শোভিত করতে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে তাঁর কূটনৈতিক তৎপরতার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু ছুটেছেন দেশ থেকে দেশে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় ও বন্ধু তৈরিতে মনোনিবেশ করেছিলেন। তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন আমাদের হৃদয়ে, হৃদয়ের স্পন্দনে। যত দিন এই বাংলায় চন্দ্র, সূর্য উদয় হবে, পাখির কলতান থাকবে, বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন তিনি বেঁচে থাকবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সততা ও সাহসিকতা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। এই নীতি অনুসরণ করে শেখ হাসিনা দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেনও আলোচনায় অংশ নেন।