নাটোরের সিংড়ায় ১৫ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে ‘চলনবিল ডিজিটাল সিটি সেন্টার’। একই জায়গায় চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে হাইটেক পার্ক, ইনকিবিউশন সেন্টার, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার। এক জায়গায় চারটি প্রতিষ্ঠান নির্মিত হচ্ছে জেনে খুশি ফ্রিল্যান্সারসহ স্থানীয়রা।
সরেজমিনে জানা যায়, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের শেরকোল এলাকার বিশাল এলাকা জুড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে চলনবিল ডিজিটাল সিটি সেন্টার। ১৫ একর জায়গার ওপর আইসিটি বিভাগের অধীনে ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি হাইটেক পার্ক ও ১৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিবিউশন সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে।
এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সিংড়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার।
এরই মধ্যে হাইটেক পার্ক ও গণপূর্ত বিভাগের অধীনে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। বর্তমানে চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হাইটেক পার্কের মূল ভবনের কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে চলছে । হাইটেক পার্কটি নির্মাণ করছে আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক লিমিটেড।
চারটি প্রতিষ্ঠানের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হলে চলনবিলের অন্তত ২০ হাজার বেকার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির হবে বলে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এদিকে চলনবিল ডিজিটাল সিটি সেন্টার নিয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি আশার আলো দেখছেন চলনবিলের ফ্রিল্যান্সাররাও। চলনবিলের প্রত্যন্ত এলাকায় চারটির মধ্যে একটি হাইটেক পার্ক, অন্যটি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিবিউশন সেন্টার হওয়ায় ফ্রিল্যান্সার তৈরির কারিগর হবে এখানে। উন্নত প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব বলে জানান ফ্রিল্যান্সাররা।
হাইটেক পার্ক নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মশিউর রমজান বলেন, গত বছর আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে কাজের অনুমতি দেরিতে পাওয়ার কারণে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সিংড়ার ফ্রিল্যান্সার শাফি ইসলাম বলেন, শস্য ভান্ডার হিসেবে সারাদেশের মানুষ চলনবিলকে চেনে এবং জানে। তবে চলনবিল ডিজিটাল সিটি সেন্টার নির্মাণ করা হলে দেশের মানুষ নতুন করে চলনবিল তথা সিংড়ার মানুষকে চিনবে। এখানে উত্তরাঞ্চলের তরুণ-তরুণীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব ঘোচাতে পারবে।
ইঞ্জিনিয়ার বাসেদ রহমান বলেন, হাইটেক পার্কের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। শেষ হওয়ার কথা আছে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে। দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলেছে। মূল ভবনের ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, চলনবিল ডিজিটাল সিটি সেন্টার নির্মাণ কাজ শেষ হলে এখানে একখণ্ড সিঙ্গাপুর গড়ে উঠবে। চলনবিলের শিক্ষিত বেকার যুবকরা ডিজিটাল সিটি সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলে অন্তত ২০ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।