ডেস্ক নিউজ
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেন। তার শুদ্ধি অভিযানের মূল টার্গেট ছিল ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান। এই সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি তার নিজের দলের দু’র্বৃত্ত, বিশেষ করে যুবলীগের দক্ষিণ মহানগরীতে যারা ক্যাসিনো বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ সময় যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া, দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাট সেলিম প্রধান, মোহমেডান ক্লাব ও বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের পরিচালক লোকমান হোসেন ভুইয়াসহ ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
মতিঝিল পাড়ায় ক্লাবগুলোতে একের পর এক অভিযান পরিচালিত হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমান ক্যাসিনো সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। এই অভিযানের পর মতিঝিল পাড়ার ক্লাবগুলোর কার্যক্রম এখন পর্যন্ত বন্ধ।
এই অভিযানে প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন যুবলীগের দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ। দীর্ঘদিন ধরেই ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তখন তৎকালীন ধানমন্ডির এমপি শেখ ফজলে নূর তাপস এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও কেন এখনো সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না!
তাপসের এই বক্তব্যের ২৪ ঘন্টা পরপরই ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয় তার সঙ্গীসহ। আর এ কারণেই ক্যাসিনো সম্রাজ্যে যারা হোতা তারা নির্বাচনে তাপসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। জেল থেকেও অনেকে তাপসকে হারানোর চেষ্টা করছে। কেউ কেউ ইশরাককে অর্থকড়ি দিয়ে সাহায্য করেছে এমন তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। অবশ্য এতে তাপসের হিতে বিপরীত হচ্ছে, আওয়ামী লীগ এই প্রার্থী সাধারণ ভোটারদের মন জয় করছেন, স’ন্ত্রাসী-দু’র্বৃত্তদের নয়।
মতিঝিল ক্লাবপাড়া দীর্ঘদিন সাদেক হোসেন খোকা এবং মির্জা আব্বাসের দৌরাত্ম্যতে পরিচালিত হতো। সেই সময় মির্জা আব্বাস এবং সাদেক হোসেন খোকার মাধ্যমেই ক্লাবপাড়ায় আ’ন্ডারওয়া’র্ল্ডের জন্ম হয়। সেখানে ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ নানারকম অনৈতিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। দীর্ঘদিন মির্জা আব্বাসের স’ন্ত্রাসী ক্যা’ডাররা মতিঝিলে চাঁ’দাবাজি করত। এরপর সাদেক হোসেন খোকা মতিঝিলের এলাকাগুলোতে চাঁ’দাবাজি করে।
খোকার পর সর্বশেষ মতিঝিলের কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। সব ধরণের নির্মাণ এবং ব্যবসা বাণিজ্যে সম্রাটকে ভাগ দিতে হত এমন তথ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রে পাওয়া গেছে।আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এই ক্যা’সিনোবাজ, টে’ন্ডারবাজ ও দু’র্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করলেন তখন মতিঝিলের আ’ন্ডারওয়ার্ল্ড আত্মগোপনে চলে যায়। এ সময় আ’ন্ডারওয়ার্ল্ডের যে চেইন সেই চেইনে ভেঙে গিয়েছিল।
আসন্ন সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে মতিঝিলের আ’ন্ডারওয়ার্ল্ডের স’ন্ত্রাসী এবং ক্যা’সিনো বাণিজ্যের হোতারা আবার সঙ্গবদ্ধ হতে চাইছে। তারা মনে করছেন ফজলে নূর তাপস যদি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন তাহলে মতিঝিল ও পল্টন এলাকার চাঁ’দাবাজির পাশাপাশি দু’র্বৃত্তায়ন অসম্ভব হয়ে পড়বে। সেজন্য স’ন্ত্রাসী, চাঁ’দাবাজ এবং ক্যা’সিনো বাণিজ্যের হোতারা একাট্টা হয়েছেন ইশরাকের পক্ষে। এর ফলে মতিঝিল পাড়ায় আবার উল্টো ফল হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মতিঝিলের ব্যবসায়ী, ঠিকাদারসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা মনে করছে ইশরাককে ভোট দিলে তার বাবার সময় যারা স’ন্ত্রাসী ও চাঁ’দাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিল তারা আবার দাপট দেখাতে শুরু করবে। আবার মতিঝিলে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হবে ক্যাসিনো বাণিজ্য শুরু হবে।
অন্যদিকে ক্যাসিনো বাণিজ্যের হোতা ও স’ন্ত্রাসীদের ধারণা এবার নির্বাচন তাপস বিজয়ী হলে তাহলে তাদের রাজত্ব চিরতরে হারাতে হবে। আর এ কারণেই তারা ইশরাকের পক্ষে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
শেষ পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণের নির্বাচন স’ন্ত্রীসের সঙ্গে সৎ নাগরিকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিণত হয়েছে। যেখানে স’ন্ত্রাসী এবং ক্যা’সিনো বাণিজের হোতাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন ইশরাক হোসন। আর অন্যদিকে সাধারণ নাগরিকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফজলে নূর তাপস।