করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকলেও তা উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের নিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা যুবলীগ। এই সমাবেশ কর্মসুচি পালন করায় সমালোচনার মুখে পড়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম।এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) রাতেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, আগাম খবর জেনেও সমাবেশে বাধা দেয়নি পুলিশ প্রশাসন বা উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে কর্মসূচিতে যুবলীগ নেতা রেজা নিজেও উপস্থিত ছিলেন। এত মানুষের সমাগমের ফলে করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয় এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সমাবেশ ঠেকানো তো দূরে থাক, সমাবেশ সফল করতে বেলকুচি থানা পুলিশের সদস্যরা বিশেষ করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম
শুরু থেকেই যুবলীগ নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা করেছেন।
সমাবেশের বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা জানান, তারা প্রথমে চালা এলাকায় মানববন্ধন করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করায় লোক সমাগম বেড়ে প্রায় ৫/৬ হাজারে পৌঁছে যায়। পরে পার্টি অফিসের সামনে তারা সমাবেশেরর আয়োজন করেন।
এ ব্যাপারে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম জানান, মানববন্ধন ও সমাবেশের বিষয়ে কোনও প্রকার অনুমোদন নেওয়া হয়নি। বরং বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক জানান, করোনা মহামারির মধ্যে সব ধরনের মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সাজ্জাদুল হক রেজা মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সংগঠন বিরোধী কার্যক্রম করেছে।
জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল জানান, এটা মনে হয় দলীয় কোনও কর্মসূচি ছিল না।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, সাজ্জাদুল হক রেজা কতিপয় সন্ত্রাসীর মাধ্যমে তাঁত শ্রমিকদের টাকা দিয়ে ভাড়া করে এনে এ ধরনের জমায়েত করেছে। পুলিশ বাধা দেয়নি। এ ধরনের জমায়েতের কারণে বেলকুচি উপজেলা জুড়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ ও পুলিশ সুপার মো. হাসিবুল আলমের সরকারি মুঠোফোনে শুক্রবার (২৬ জুন) সকালে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি।
বেলকুচি থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নির্দেশে ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) রাতে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে শুক্রবার সকালে মোবাইল ফোনে বলেন, বেলকুচির ইউএনও বদলি হয়ে গেছেন কামারখন্দের ইউএনও ভারপ্রাপ্ত হিসেবে থাকলেও বিষয়টি আগে থেকে অবগত ছিলেন না। বেলকুচিতে দলীয় লোকজনের মধ্যে যতই বিভাজন থাকুক না কেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তাদের এ ধরনের সমাগম করাটা মোটেও উচিত হয়নি।