ডেস্ক নিউজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সৌদি আরবের বড় ধরনের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে সৌদি আরবের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই। সফররত সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের দেয়া বিদ্যমান বিভিন্ন সুবিধা কাজে লাগাবেন। তিনি বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য জমি বরাদ্দ করাসহ তাদের সহযোগিতা জোরদারে প্রস্তুত বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সৌদি আরবের সাথে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করা হয়েছে। এসব খাতের মধ্যে রয়েছে অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রতিরক্ষা।
বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ককে একটি ‘বন্ধুত্বের শক্ত বন্ধন’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে এই বন্ধন আরো জোরদার হবে।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নতুন খাত খুঁজে বের করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরো বাড়ানোকে তারা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের সাথে একত্রে কাজ করারও আশা করেন।
শেখ হাসিনা সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ ও যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান আল সৌদকে তার শুভেচ্ছা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মো: জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. জাভেদ পাটোয়ারী, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসাফ ইসা আল দুলাইহান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিমানবাহিনীকে শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেম বজায় রাখার আহ্বান : বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর (বিএএফ) সদস্যদের যেকোনো লক্ষ্য অর্জনে কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেমের বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিমান বহরে ‘গ্রোব-১২০ টিপি’ প্রশিক্ষণ বিমান সংযোজন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোরে বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এ দিন বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয় ১২টি গ্রোব-১২০ টিপি প্রশিক্ষণ বিমান। প্রধানমন্ত্রী নতুন অন্তর্ভুক্ত বিমানের মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট প্রত্যক্ষ করেন। বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নততর এবং যুগোপযোগী উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ সুনিশ্চিত করার জন্য আমরা ইতঃপূর্বে সংযোজন করি অত্যাধুনিক ফ্লাই-বাই-ওয়্যার এবং ডিজিটাল ককপিট সম্বলিত ইয়াক-১৩০, কমব্যাট ট্রেইনার, কে-৮ ডব্লিউ জেট ট্রেইনার, এল-৪১০ ট্রান্সপোর্ট ট্রেইনার, এডব্লিউ-১১৯ কে এক্স হেলিকপ্টার ট্রেইনার এবং বিভিন্ন ধরনের সিমুলেটর। এরই ধারাবাহিকতায়, আজ বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে ১২টি গ্রোব-১২০ প্রশিক্ষণ বিমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরের মধ্যেই দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো কয়েকটি বিমান এই বাহিনীতে যুক্ত হবে। এ ছাড়াও শিগগিরই বিমানবাহিনীতে আনম্যানড অ্যারিয়াল ভেহিকেল সিস্টেম, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, মোবাইল গ্যাপ ফিলার রাডার, কে-এইট ডব্লিউ এয়ারক্রাফট সিমুলেটর, অ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম যুক্ত হতে যাচ্ছে।
তৃণমূল পর্যায়ে নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী বলছেন, তার সরকার ৯০ শতাংশ মানুষকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের আওতায় আনার লক্ষ্যে তৃণমূল থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামে নয়; বরং ইউনিয়ন পর্যায়ের ৯০ শতাংশ মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল চট্টগ্রাম ওয়াসা বাস্তবায়িত ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-২’-এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হোটেল রেডিসন ব্লøুতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।