ডেস্ক নিউজ
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই প্রত্যাশিত গতিতে এগিয়ে চলছে দেশের একমাত্র নদীর তলদেশের নির্মাণাধীন টানেলের কাজ। ‘লকডাউনের’ কারণে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেই কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ও দুই তীরে চলছে বিরামহীন কর্মযজ্ঞ। এরই মধ্যে কর্ণফুলী টানেলের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে সাড়ে ৬৭ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার স্বপ্ন দেখছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই চলমান রয়েছে টানেল তৈরির কাজ। তবে কাজের ধারা ঠিক রাখতে সব শ্রমিককেই কর্মস্থলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে টানেল তৈরির কাজ।’
জানা যায়, সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যেও চলছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল তৈরির কাজ। দেশি-বিদেশি ১৩০০ শ্রমিকের অংশগ্রহণে চলছে বিরামহীন কর্মযজ্ঞ। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ কিংবা দুই তীরে সমান রয়েছে কাজের গতি। প্রথম টিউবকে যান চলাচলের উপযোগী করার কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে। এরই মধ্যে প্রথম টিউবে ৫২০ মিটার সড়ক তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় টিউবের খননকাজও চলছে অভিন্ন গতিতে। মের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় টিউব খনন হয়েছে ১২০০ মিটার। নদীর দুই তীরকে টানেলের সঙ্গে যুক্ত করার সংযোগ সড়ক তৈরির সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরাও দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছে না। একইভাবে সংযোগ সড়কের সঙ্গে যুক্ত উড়াল সেতু তৈরির কাজও চলছে সমানতালে। সংযোগ সড়কের সঙ্গে যুক্ত উড়াল সেতুর কিছু কিছু জায়গায় বসানো হয়েছে গার্ডার। আবার কিছু জায়গায় বসানো হয়েছে স্লাব। সংযোগ সড়কের ব্রিজ ও কালভার্ট তৈরির কাজও চলছে একইভাবে। চীনের সাংহাই নগরীর আদলে চট্টগ্রাম শহর ও আনোয়ারাকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’র আদলে কর্ণফুলী নদীতে তৈরি হচ্ছে টানেল। এ টানেলের এক প্রান্তে রয়েছে আনোয়ারার ভারী শিল্প এলাকা। অন্য প্রান্তে চট্টগ্রাম নগরী, বিমান ও সমুদ্রবন্দর। বিভক্ত দুই অংশকে একই সুতোয় যুক্ত করতে সরকার কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ সরকার ও চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক এ প্রকল্পের যৌথ অর্থায়ন করছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এ টানেলটি যান চলাচলের জন্য উন্মুুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি পুরোদমে চালু হলে প্রতি বছর প্রায় ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করবে টানেল দিয়ে। টানেলের মাধ্যমে দুই সিটি সক্রিয় থাকলে পাল্টে যাবে চট্টগ্রাম তথা দেশের অর্থনীতি। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে শিল্পকারখানা ও পর্যটন শিল্পে।