ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক দোতলা ও প্রশস্ত করা হবে। এ জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে এক হাজার ৩৪৬ কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। চীনা কোম্পানি এসডিএলকিউ এবং সিএসআই যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এ-সংক্রান্ত একটি ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়কটি ধলেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন ষষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু ২০০৮ সালে উদ্বোধনের পর থেকে সেতুর সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সড়কটি খুব সঙ্কীর্ণ (গড় প্রশস্ততা ৫.৫ মিটার), আঁকাবাঁকা ও রাস্তার উভয় পাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, দোকানপাট থাকায় যানবাহন চলাচলে প্রায়ই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে পাঁচটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এবং আলু সংরক্ষণের জন্য বেশ কয়েকটি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে।
এই সড়কে ২৪ টন থেকে প্রায় ৫০ টন পর্যন্ত ভারী যানবাহন নিয়মিত চলাচল করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রকল্প এলাকায় বিসিক শিল্পাঞ্চল এবং রফতানিমুখী গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি থাকায় প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক রাস্তাটি ব্যবহার করে। এ অবস্থা বিবেচনা করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ‘পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলা রাস্তা নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা রয়েছে দুই হাজার ২৪২ হাজার ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রকল্পটি জিওবি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে, যার মেয়াদকাল ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। জানা গেছে, ১০.৭৫ কিলেমিটার অ্যাট-গ্রেড সড়ক প্রশস্ত করা, ৯.০৬ কিলোমিটার দোতলা রাস্তা (২.৮০৫ কিলোমিটার র্যাম্প-সহ) নির্মাণ, ১৫১ মিটার সেতু প্রশস্ত করা, ২৪৮ ঘনমিটার বক্স কালভার্ট, টোল প্লাজা, টোল মনিটরিং বিল্ডিং, ৯.৩৫ কিলোমিটার অস্থায়ী সড়ক, ১৭ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য পূর্ত কাজের জন্য মোট এক হাজার ৩৪৬ কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার ৬৭৫ টাকার একটি দাফতরিক প্রাক্কলন অনুমোদিত হয়।
সে অনুযায়ী উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত সময়ে ১৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানকে টেকনিক্যালি রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচনা করে তাদের আর্থিক প্রস্তাব উন্মুক্ত করার বিষয়ে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক সর্বসম্মতিক্রমে সুপারিশ করা হয়। এদের মধ্যে চীনা যৌথ কোম্পানি এসডিএলকিউ এবং সিএসআই ১২০৬ কোটি ছয় লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৬ টাকা উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭৩.৫১ শতাংশ ও বৈদেশিক মুদ্রায় দুই হাজার ৬৪৯ শতাংশ বিল পরিশোধ করতে হবে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ওই সড়কে পণ্য পরিবহন এবং জনসাধারণের যাতায়াত ব্যবস্থায় উন্নতি হবে। পাশাপাশি নিত্য দুর্ভোগ লাঘব হবে।