ডেস্ক নিউজ
করোনার কারণে চলতি বছর একজন ঋণগ্রহীতার যে পরিমাণ পরিশোধ করার কথা তার ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলে আর খেলাপি হবেন না। ছোট উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি বড়রাও এ সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি ইডিএফের ঋণসীমা বাড়ানো ও স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের দাবিও পর্যালোচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আয়োজিত ব্যাংকার্স সভায় জানানো হয়েছিলো, ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আর বাড়ছে না। তবে ওই সভায় ক্ষুদ্র গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছিলো। যেখানে মাত্র ১৫ শতাংশ অর্থের মাধ্যমেই খেলাপিমুক্ত থাকতে পারবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা।
দুদিন আগের এ সিদ্ধান্তের পর বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ১৮ জন শীর্ষ ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে দেখা করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, বিআইসি সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ, রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল, এমসিসিআই নতুন সহ-সভাপতি টিএম কামরুল ইসলামসহ এফবিসিসিআইয়ের বোর্ড সদস্যরা।
বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতারা আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছেরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
সভা শেষে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ১৫ শতাংশের সুবিধা ছোট-বড় সবাইকে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। গভর্নর এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। একইসঙ্গে ইডিএফ ঋণসীমা বাড়ানো, স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ পরিশোধের দাবিও জানিয়েছি। তবে এ বিষয়ে তারা পরে জানাবেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, চলমান বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের অনেকেই বায়ারদের কাছে পণ্য দিলেও অর্থ ফেরত পায়নি, এতে খেলাপি হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এসব বিষয়ে পর্যালোচনা করে জানাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সার্বিকভাবে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি।
এদিকে সভার পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিআরপিডি এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, ‘এক্ষণে, সিএমএসএমই খাতে বিতরণকৃত ঋণ/বিনিয়োগের অনুরূপ বিআরপিডি সার্কুলার-১৯/২০২১ আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত অন্যান্য ঋণ/বিনিয়োগের বিপরীতেও জানুয়ারি/২১ হতে ডিসেম্বর/২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তি/অর্থের ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ আদায় হলে উক্ত ঋণ/বিনিয়োগ হিসাবসমূহ অশ্রেণিকৃত হিসেবে প্রদর্শন করা যাবে। এবং সংশ্লিষ্ট ঋণ/বিনিয়োগের ভবিষ্যত আদায় ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ২০২১ সালের আরোপিত সুদ/মুনাফা আয়খাতে স্থানান্তর করা যাবে। তবে ইতোপূর্বের নির্দেশনা অনুযায়ী ২ শতাংশ অতিরিক্ত জেনারেল প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।