ডেস্ক নিউজ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ২০১৫ সালে আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে উঠতে এখনো তাঁদের বেগ পেতে হচ্ছে। আন্দোলন নিয়ে নিজ দলের মধ্যে ওঠা সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ফখরুল বলেন, এখনো বিএনপি আন্দোলনেই আছে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘নির্বাচনে আস্থাহীনতা, ইভিএম’র ব্যবহার: বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
এক যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি আন্দোলন করতে পারছে না বা বড় আন্দোলনে যাচ্ছে না—এ সমালোচনার দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি একটি উদারপন্থী দল। এর কাছে কেউ বিপ্লব আশা করলে হবে না। এই দল তার নিজস্ব চরিত্র নিয়ে এগিয়ে যাবে। আমরা প্রতি মুহূর্তে আন্দোলেনর মধ্যে আছি। আমরা কোর্টে যাই, আলোচনা করি, নির্বাচনে যাই সবই আন্দোলনের অংশ। এই আন্দোলনগুলোকে একসঙ্গে করে আমরা বড় আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাব।’ হঠাৎ করে কিছু করে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে চান না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা আছে যে ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় এবং ২০১৫ তে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে আমাদের এখনো অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। ’
২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের অংশ নেয়নি বিএনপি। ২০১৫ সালে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথের আন্দোলন শুরু করেছিল তারা। টানা তিন মাসের সেই আন্দোলন ছিল কার্যত নিষ্ফল। তার মাশুল এখনো গুনতে হচ্ছে দলটিকে। বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী মামলার আসামি কারাগারে যান, অনেকে আত্মগোপনে। এ ছাড়া আন্দোলন চলাকালে নাশকতার ঘটনা বিএনপির ভাবমূর্তি সংকটেও ফেলে।
বিএনপির বিভিন্ন মিছিল বা র্যালিতে জনসমাগম হলেও আন্দোলনে নামতে গেলে রাস্তায় লোক কম হচ্ছে কেন? এ সমালোচনার জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক কর্মী নির্যাতনের শিকার হলে, গুম–হত্যার শিকার হলে তখন তার মধ্যে হতাশা কাজ করতে পারে। তাদের অনুপ্রাণিত করেই এগিয়ে যেতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদের কাজ তাদের অনুপ্রাণিত করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
পরিবেশ এবং ক্ষেত্র তৈরি হলে কর্মীরা উঠে আসে। ঢাকা সিটি নির্বাচনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এখন মিছিলে অনেক বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছে। এদেরকে সংহত করে আন্দোলনে নিয়ে যেতে পারলে তাঁরা সফল হবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্যই অংশ নিয়েছি। জনগণকে এক করতে পারলে বিএনপি এই নির্বাচনে জয়ী হবে।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ইভিএম একটা গজব। মানুষ যা তৈরি করে, তা নিজের জন্যই করে। ক্ষমতাসীনেরা নিজেদের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ইভিএম আমদানি করিয়েছে। ২০১৮ সালের ভোটের নামে যে ‘ডাকাতি’ হয়েছে তা পুনরায় করার সুযোগ নেই। তাই তারা ভিন্ন একটা পথ নিয়েছে। একটি মেশিন বের করেছে। তারা সমস্ত দায় মেশিনের ওপরে দেবে। চারদিকে শুধু নৌকার পোস্টার, ধানের শীষের কোনো পোস্টার নেই বলেও জানান মান্না।
মান্না বলেন, ২০১৮ সালে ছেড়ে দিলেও এবারের নির্বাচনে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। এবারে সিটি নির্বাচনেও ধানের শীষকে জিততে দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপিকে আরও শক্তভাবে মাঠে থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন।