ডেস্ক নিউজ
স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামসের ২ হাজার ৫০৪ জনের তালিকা সরকারের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তালিকা চেয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের চিঠি দেয়ার পর এ সংখ্যা পাওয়া গেছে।
জাতীয় সংসদ ভবনে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। এতে সংসদীয় কমিটি রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা যতটুকুই এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, তা অবিলম্বে গেজেট আকারে প্রকাশের সুপারিশ করে। এরপর এ তথ্য জানানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও পিস কমিটির সদস্যদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে গত বছরের ৯ আগস্ট ছয় সদস্যের উপকমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। এরপর থেকে রাজাকারের তালিকা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। এ কমিটি থেকে তালিকা পাওয়া গেলে প্রাপ্ত তালিকাসহ যাচাই-বাছাই করে গেজেট আকারে প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কাছে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আমরা যাদের নাম পাচ্ছি তাদের তালিকা সংশ্লিষ্ট উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। সেখান থেকে ভেরিফাই হয়ে আসছে। তারপর তালিকা করা হচ্ছে। আইনটা হয়ে গেলে তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
গত বছর বিজয় দিবসের আগে আংশিক তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও আইনি বাধ্যবাধকতায় তা সম্ভব হয়নি। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আইনের সংশোধন ছাড়া এটি প্রকাশ করা যাবে না বলে সরকার আইনটি সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। আইন সংসদে পাশ হলে তারা রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় টাকা বাড়বে : এদিকে বৈঠকে সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সহায়তা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মো. শাজাহান খান বলেন, ‘উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সহায়তা হিসাবে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে সেবা দেয়া হয়। আমরা এটা ৭৫ হাজার টাকা করতে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘ওষুধ কিনতে খুব বেশি টাকা লাগে না। চিকিৎসার মূল ব্যয় হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষায়। সেজন্য আমরা এ টাকার পরিমাণ বাড়ানোর সুপারিশ করেছি।’
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশে মন্ত্রণালয় প্রস্তুত : এদিকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বরাত দিয়ে মো. শাজাহান খান জানান, আগামী স্বাধীনতা দিবসের আগে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করতে মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি বলেন, কমিটির বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৬ মার্চের আগে তালিকা দিতে তাদের প্রস্তুতি আছে। বৈঠকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে যথাশিগগিরই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সুপারিশ করা হয়।
পরবর্তী প্রজš§কে অবহিত করার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং পাঠাগার স্থাপনেরও পরামর্শ দেয়া হয়।
কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ ও মোছলেম উদ্দিন আহমদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।