করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনের কারণে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে কর্মরত অনেকেই বড়দিনের ছুটিতে তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে যেতে পারছেন না। একইভাবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে যারা যুক্তরাজ্যের বাইরে রয়েছেন তারাও ফিরতে পারছেন না নিজ দেশে।
বড়দিনের দীর্ঘ ছুটিতে নিজ এলাকার মাটিতে প্রাণভরে শ্বাস নিতে না পেরে যাদের মন খারাপ তাদের জন্য একটি অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে রিলোকেশন ওয়েবসাইট মাই ব্যাগেজ।
নিজ এলাকায় না গিয়েও কেউ যাতে সেখানকার বাতাসে প্রাণভরে শ্বাস নিতে পারেন সেজন্য যুক্তরাজ্যের কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের বিশুদ্ধ বাতাস বোতলে ভরে বিক্রি করছে মাই ব্যাগেজ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের বিশুদ্ধ বাতাস ‘ঘরকাতুরেদের’ কাছে বিক্রি করছে মাই ব্যাগেজ। ছিপি আটকানো ৫০০ মিলিলিটারের বোতলে একেকটি এলাকার বাতাস ৩০ ডলারে বিক্রি করা হচ্ছে।
বিশেষ অনুরোধ জানানো হলে এই চারটি অঞ্চল ছাড়াও যুক্তরাজ্যের অন্য অঞ্চলের বাতাসও সরবরাহ করা হবে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সম্প্রতি তারা ওয়েলশের এক অধিবাসীর অনুরোধে উত্তর-পশ্চিম ওয়েলসের স্নোডোনিয়া পার্বত্য অঞ্চলের বাতাসের নমুনা সরবরাহ করেছে।
লন্ডনের মাটির নিচে ফিশ অ্যান্ড চিপ বাজারের বাতাসও বিক্রি করা হয়েছে।
মাই ব্যাগেজ মূলত যারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যান তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, তারা মানুষের ঘ্রাণের ওপর গবেষণা চালানোর পরই বোতলজাত বাতাস বিক্রি করতে অনুপ্রাণিত হয়েছে।
গবেষণায় একজন মানুষের ঘ্রাণেন্দ্রিয় তার সংবেদনশীল স্মৃতির সঙ্গে কতটুকু যুক্ত থাকে তা দেখানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা বোতলজাত বাতাস বিক্রির মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের নিজ অঞ্চলে ফিরে যেতে সহায়তা করতে চেয়েছি। প্রকাশিত গবেষণা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে আমাদের আবেগ জাগাতে ঘ্রাণ খুব ভালো উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘গ্রাহকরা যদি তাদের নিজেদের অঞ্চলের বাতাস প্রাণভরে নিতে পারেন তবে তাদের হোমসিকনেস কমবে বলে আমরা মনে করছি। তারা যেখানেই থাকুন না কেন এটি তাদেরকে পরিবার বা নিজ অঞ্চল থেকে দূরে নতুন জীবনে ভালোভাবে বেঁচে থাকাতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।’
মাই ব্যাগেজ আরও জানিয়েছে, যারা বাতাসভর্তি বোতলগুলো কিনছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই বিদেশে থাকা বন্ধু ও স্বজনদের কাছে তা উপহার হিসেবে পাঠাচ্ছেন।
প্রায় চার বছর আগে এয়ার ফার্মিং কোম্পানি অ্যাথারও ৫৮০ মিলিলিটার বোতলে ব্রিটেনের বাতাস বিক্রি করতে শুরু করেছিল। বেইজিং কিংবা সাংহাইয়ের মতো চীনের দূষিত শহরগুলোতে অ্যাথারের একেকটি বাতাসভর্তি বোতল ১১৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান ভাইটালিটি এয়ার রকি পর্বতমালা থেকে চীনা গ্রাহকদের কাছে বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ করে থাকে। ৫২ ডলার ৯৯ সেন্ট দামে আট লিটারের দুটি বোতলে বাতাস বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠানটি।
সুইস কোম্পানি সুইসব্রিজও মধ্য ইউরোপের দেশগুলোতে ২০ ডলারে আট লিটারের বোতলে পর্বতাঞ্চলের বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ করে থাকে।
সূত্রঃদ্যা ডেইলি স্টার