নিউজ ডেস্ক
আগামী পাঁচ বছরে সরকার দেশের দেড় কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বলে সংসদে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে দেশের ইপিজেডে ৩ লাখ ৫ হাজার ২৪২ জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় যুব উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯ লাখ ২৫ হাজার ১৫০ জন যুবক ও যুব মহিলাকে প্রশিক্ষণ প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্য থেকে ৫ লাখ ৯৬ হাজার জনকে আত্মকর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করা, ৭৫ হাজার জনকে ন্যাশনাল কর্মসূচির আওতায় অস্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান এবং শেখ হাসিনা জাতীয় যুবকেন্দ্রকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
২৬ জুলাই জাতীয় সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফের তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ক্রমবর্ধিত হারে নারী শ্রম শক্তির অংশগ্রহণের কারণে প্রায় ৩ দশমিক ১ শতাংশ হারে মোট শ্রমশক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পাঁচ বছর মেয়াদে ১২ দশমিক ৯ মিলিয়ন অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তিনি এ সময়ে প্রবাসে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের বর্তমান ধারা অপরিবর্তিত থাকার আশা প্রকাশ করে জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিদেশে ৮ লাখ ২০ হাজার শ্রমিক পাঠানো হয়েছে।
সরকার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় সাত পর্বে ৩৭টি জেলার ১২৮টি উপজেলায় ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৮৫ জন যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই কর্মসূচির আওতায় ২ লাখ ২৫ হাজার ৪০২ জন বেকার যুবকের দুই বছরের অস্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই কর্মসূচি সকল জেলায় সম্প্রসারণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি পর্যায়ে আইটি এবং উদ্ভাবনী সেক্টরে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩ লাখ ৫০ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং ২০২১ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা হবে ৭ লাখ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত আইটি সেক্টরে ৬৮ হাজার জনের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং ২০২১ সালে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৩ লাখ।
সরকার প্রধান বলেন, লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এন্ড গভর্নেন্স প্রকল্পের আওতায় বিশ্বমানের প্রশিক্ষণে ৩৩ হাজার ১৮৮ জন আইটি প্রশিক্ষিত দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা হয়েছে। যারমধ্যে ১০ হাজার ৮২১ জনের আইটি শিল্পে কর্মসংস্থান হয়েছে।
এছাড়া রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে মাধ্যমে ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে, ২৮টি হাইটেক পার্ক এবং সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পার্কগুলো সম্পূর্ণ চালু হলে ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং কনস্ট্রাকশন সেক্টরে ৫ লাখ দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি সেক্টরে ২০২৩ সালের মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে বিনা জমানতে ও সহজ শর্তে জনপ্রতি ২ লাখ টাকা পর্যন্ত যে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে তা আরও বিস্তৃত করা হবে।