ডেস্ক নিউজ
মাঠপর্যায়ে সরকারি কর্মচারীসহ সর্বস্তরের জনগণকে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দিতে ঢাকার সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের মতো দেশের সব বিভাগে ‘সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠা করতে চায় সরকার। এ জন্য আট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারকে দুই দফায় চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। হাসপাতালের জন্য সরকারি অর্থাৎ খাসজমি পাওয়া না গেলে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করেই নির্মাণ করা হবে বলে বৃহস্পতিবার বিভাগীয় কমিশনারদের মাসিক সমন্বয়সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিকে চিঠির পর হাসপাতালের নির্মাণের জন্য জনপ্রশাসনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়। তাদের প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানা গেছে। অন্য বিভাগ থেকে এখনো প্রস্তাব পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আবদুুল মান্নান বলেন, রাজশাহীতে সরকারি কর্মচারী
হাসপাতালের নির্মাণের জন্য একটি খাসজমি প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সেটি পরিদর্শন করেছেন। শহরের শ্রীরামপুর মৌজায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও বেতারের পাশে জমিটির অবস্থান। আমরা আমাদের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আশা করছি খুব শিগগির হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এদিকে যেসব বিভাগীয় কমিশনার এখনো প্রস্তাবটি পাঠাননি, তারা যেন চলতি মাসের মধ্যেই প্রস্তাব পাঠান তা নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত ২২ আগস্ট সচিবলায়ে আট বিভাগীয় কমিশনারের সমন্বয় বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার ফের বিভাগীয় কমিশনারদের সমন্বয়সভায় বিষয়টি আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কমিশনারদের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে- বিভাগীয় কমিশনারদের কার্যালয় থেকে স্থান নির্বাচনসহ জমির পরিমাণ, স্থানিক নকশা এবং সম্ভাব্য প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব
সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পাঠাতে হবে। এ ছাড়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল নির্মাণের জন্য অর্থ সংস্থান করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে।
এদিকে সব বিভাগে সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল নির্মাণের জন্য অর্থ সংস্থান করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে গত ৮ জুন চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর পর গেল ৩০ জুলাই ফের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে জনপ্রশাসন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, রাজশাহীর যে প্রস্তাবটি পাওয়া গেছে তার সম্ভাব্যতা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। রাজশাহীর হাসপাতালটি সরকারি জমিতে নির্মাণ করা হবে।
জনপ্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালটি চালু হয়। হাসপাতালটি আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছিল। ২০১৫ সাল থেকে এটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত হচ্ছে। চালু হওয়ার পর থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ নাগরিকরা এই হাসপাতাল থেকে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছে। এই হাসপাতালের অভিজ্ঞতা মোটামুটি সন্তোসজনক। ঢাকার সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে প্যাথলজি, রেডিওলজি ও কার্ডিওলজি সেবাসহ বেশ কিছু সেবা চালু রয়েছে। দেশের অন্যান্য বিভাগেও এই হাসপাতালের আদলেই সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।
হাসপাতালের জন্য জনপ্রশাসনে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন এনডিসি বলেন, আমরা খুলনায় হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সরকারি জমি নির্বাচনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু উপযুক্ত জমি পাওয়া যায়নি। বেসরকারি জমি নির্বাচনের জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) সমন্বয়সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব শিগগির জমি নির্ধারণ করা হবে।