একজনের তথ্যের সাথে অন্যজনের ছবি লাগিয়ে তৈরি করা হতো একেকটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট। ট্রেজারি থেকে লেনদেনের জন্য উত্তোলিত তহবিল থেকে টাকা সরিয়ে দেখানো হতো জমা। এমন নানা কৌশলে চট্টগ্রাম জিপিওতে, কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র।
ডাক বিভাগ এখনও অনেক মানুষের সঞ্চয়ের ভরসার নাম। সেই বিভাগের চট্টগ্রাম প্রধান কার্যালয়ে সম্প্রতি উদঘাটিত হয় অর্থ আত্মসাতের বড় এক ঘটনা।
একদিনেই আত্মসাত করা ৪৫ লাখ টাকার মধ্যে ২২ লাখ টাকাসহ ধরা পড়ে সহকারি পোস্ট মাস্টার নূর মোহাম্মদ ও কাউন্টার অপারেটর সারোয়ার আলম খান। যদিও তা গ্রাহকদের নয়, খালি করা হচ্ছিল সরকারি কোষাগার।
২৬ আগস্ট ট্রেজারি শাখায় কর্মকর্তাদের আকস্মিক পরিদর্শনে ধরা পড়ে এই অসঙ্গতি। পরে ৩টি অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। বিভাগীয় তদন্তে এখন পর্যন্ত ১২টি ভুয়া হিসাবের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা সরিয়ে ফেলার প্রমাণ মিলেছে।
তদন্তে উঠে আসে, একব্যক্তির তথ্য আর অন্যজনের ছবি দিয়ে খোলা হত ভূয়া সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট। ট্রেজারি থেকে তোলা টাকা ওইসব অ্যাকাউন্টের লেজারে দেখানো হত। তবে দেখাতো না শিডিউলে। আবার ট্রেজারি থেকে উত্তোলন দেখানো হলেও জমা দেখাতোনা দৈনন্দিন তালিকায়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অতীতে কয়েকটি অনিয়মের ঘটনা ঘটে। যা ধামাচাপা পড়ে যাওয়ায় সূচনা হয় বড় অনিয়মের। এবারের বিষয়টি নিয়ে দুদকে অভিযোগ দেয়া হলেও এখনো মেলেনি মামলার অনুমোদন।
জিপিওতে অটোমেশন সিস্টেম চালু হলেও এখনো আধুনিকায়নের বাইরে থেকে গেছে সঞ্চয়ী কার্যক্রম। যা অর্থ আত্মসাতের মতো ঘটনার সুযোগ বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন সুশাসন বিশেষজ্ঞরা।
অভিযোগ রয়েছে, ডাক বিভাগে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত হচ্ছে শ্রমিক নেতাদের কারো কারো মদদে। যারা নিয়ন্ত্রণ করছে নিয়োগ, বদলি আর ঠিকাদারীসহ অনেক কিছুই।